বরিশাল প্রতিনিধি: অভিনব কায়দায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল নগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মধ্যে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের এক ছাত্রীসহ পাঁচ নারী রয়েছে। প্রতারণার শিকার এক যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদরে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরিশাল নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বুধবার দুপুরে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নগরীতে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। এ পর্যন্ত ১৫ জন পুরুষ তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। চক্রটির নারী সদস্যরা টার্গেট করে পুরুষদের মোবাইল ফোনে মিসকল দিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে দেখা করার কথা বলে নির্দিষ্ট বাসায় ডেকে নিয়ে ওই ব্যক্তিকে নগ্ন করে ছবি তুলে তা প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত। চক্রের পুরুষ সদস্যরা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঘটনার শিকার ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করত।
উপকমিশনার আরও জানান, গ্রেপ্তারদের মধ্যে বিএম কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী ফারজানা আক্তার ঝুমুর প্রায় একমাস আগে নগরীর এক যুবকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক করে। মঙ্গলবার রাতে ঝুমুর সরকারি বরিশাল কলেজ এলাকায় যুবকের সঙ্গে দেখা করে। সেখান থেকে অদূরে শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেনে জাকির হোসেন নামে একজনের ভাড়া বাসায় ওই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসায় পৌঁছার পর একটি কক্ষে আটকে ঝুমুর, জাকির ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা মনি জোরপূর্বক ওই যুবককে নগ্ন করে ছবি তোলে। ঝুমুরকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে সঙ্গে থাকা এবং বিকাশের মাধ্যমে মোট ১৯ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। যুবক মুক্তি পেয়ে রাতে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ দেন। রাতেই পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে জাকির ও তার স্ত্রী মনি এবং কলেজছাত্রী ঝুমুরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মামুন বয়াতি, সেলিম হাওলাদার, মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী লিজা বেগম, আরিফুর রহমান তালুকদার, খুশি বেগম এবং আশা আক্তারকে।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, চক্রটির সঙ্গে আরও অনেকে রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে গ্রেপতারকৃরা জানানা তারা এইভাবে আরো বেশ করেকজনকে প্রতারনার ফাঁদে পেলে টাকা আদায় করেছে। আর চক্রটি ব্যবহার করত সুন্দরী ও মিষ্টভাষী মহিলাদের।