বার্তা প্রতিনিধি: বাংলাদেশর সবছেয়ে বড় এবং ব্যয়বহুল দীর্ঘতম সেতু স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী জুন-২০২২ এ সবধরনের যান-চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে জানালেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আর তাই চলতি মাসেই কার্পেটিংয়ের শেষ লেয়ারের কাজ সম্পন্ন হবে। গ্যাসলাইনের স্থাপন শেষ। ল্যাম্পপোস্টের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯০ শতাংশ আর মূল সেতুর অগ্রগতি ৯৭ শতাংশ। আর সেতুর শেষ ধাপের অ্যালুমিনিয়ামের রেলিংগুলো সমুদ্রপথে যুক্তরাজ্য থেকে ১৫ মে দেশে পৌঁছার কথা রয়েছে। আর সব মিলিয়ে আগামী জুনেই পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে
এদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণযজ্ঞ একেবারে শেষপর্যায়ে এখন। সেতুটি যান চলাচল উপযোগী করতে চলছে ব্যস্ততা। সেতুর কার্পেটিং শেষ পর্যায়ে এখন। ওয়াটার প্রুভিং চারটি লেয়ারের পর দেওয়া হচ্ছে দুই লেয়ারের ১০০ মিলিমিটার পুরুত্বের বিশ্বমানের কার্পেটিং। এর অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। চলতি মাসেই কার্পেটিং শেষ হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। আর মূল সেতুর দুই পাশের সংযোগ সেতুর সব ল্যাম্পপোস্ট বসে গেছে। মূল সেতুতে বাকি ৩৫টি।
জানা গেছে যুক্তরাজ্য থেকে বিমানে উড়িয়ে সেতুর অ্যালুমিনিয়ামের ২০৪ মিটার রেলিং প্রকল্প এলাকায় পৌঁচেছে। বাকি রেলিংগুলো সমুদ্রপথে যুক্তরাজ্য থেকে ২৬ মার্চ রওনা হয়েছে। ১৫ মে দেশে পৌঁছার কথা রয়েছে। দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, প্যারপেট ওয়ালের নাট সিস্টেমের এই রেলিং লাগাতে ২-৩ সপ্তাহ লাগবে।
গত ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও তার বোন শেখ রেহানা সেতুটি দেখতে যান এবং অসমাপ্ত কাজের প্রায় ৩ কিলোমিটার সেতুর পথ পায়ে হেটে যান। তারপর তিনি আনুসাঙ্গিক কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেষ প্রদান করেন এবং জুনের মধ্যেই সেতুতে যান চলাচল উপযোগী করতে শেষ করার নির্দেষ দেন। তারপর সবপর্যায়ের কাজ সফলভাবেই এগোচ্ছে বলে জানালেন এই মহাযজ্ঞের বাস্তবের মূল কারিগর মো. শফিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশের সবছেয়ে বড় এবং স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রাতে জ্বলে উঠবে রঙিন আলোর ছটা। চোখ ধাঁধানো এই আলো শুধু পদ্মাপারের মানুষকেই নয়, আকৃষ্ট করবে পর্যটকদেরও। সেতুর নানা বৈচিত্র্যতার এটি অন্যতম আকর্ষণ। তবে আর্কিটেকচারাল লাইটিংয়ের কাজ জুনে সড়কপথ উদ্বোধনের পরই শুরু হবে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ।
বাংলাদেশের বড় এই সেতুটি পদ্মা- ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে। ৬ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮ দশমিক ১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় এ সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বাংলাদেশের পদ্মা সেতু নির্মান কাজ শেষ হলে এটি সরকার এবং জনগনের এক বিরাট প্রতিফলন ঘটবে এবং দেশী বিদেশী সব পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করবে।