এটাও দেখার বাকি ছিল। এবার ‘আজকে আমার মন ভালো নেই’; ‘মাসুদ ভালো হয়ে যাও’ লেখা সংবলিত একটি উত্তরপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া ওই উত্তরপত্রে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আলোচিত কিছু কথাও লেখা রয়েছে। ‘মাসুদ ভালো হয়ে যাও’ উত্তরপত্র ভাইরাল
জানা যায় কক্সবাজার সিটি কলেজের যুক্তিবিদ্যা পরীক্ষার এমন একটি উত্তরপত্র বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে হিসাবরক্ষক ফোরকানের একের পর এক অপরাধ দুর্নিতি
কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, মিসকাত চৌধুরী নামে কোনো ছাত্র তাদের প্রতিষ্ঠানে নেই এবং ওই দিন যুক্তিবিদ্যার কোনো পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই উত্তরপত্রে লেখা রয়েছে, ২৯ জুন মানবিক শাখার বিভাগভিত্তিক বিষয় যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার খাতায় এমন কাণ্ড ঘটানো শিক্ষার্থীর নাম মিসকাত চৌধুরী। তার রোল নম্বর ৯৮০। ফাঁস হওয়া ওই উত্তরপত্রে কক্সবাজার সিটি কলেজের নাম, লোগো, এমনকি সিটি কলেজের সিলও রয়েছে।
উত্তরপত্রের প্রথম পাতায় ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে লেখা হয়েছে, ‘আজকে আমার মন ভালো নেই।’
এরপর ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে লেখা হয়েছে, ‘কাদেরের তিনটি সূত্র লেখা হলো:
১. জ্বালা অন্তরে জ্বালা।
২. আমরা করোনার চেয়ে শক্তিশালী।
৩. কাগজে লিখো নাম, ছিঁড়ে যাবে, ব্যানারে লিখো নাম মুছে যাবে! পাথরে লিখো নাম ক্ষয়ে যাবে, হৃদয়ে লিখো নাম রয়ে যাবে।
এছাড়া ৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে তিনি লিখেছেন, ‘মাসুদ ভালো হয়ে যাও।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু বাঙালি জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধ,অহংকার এবং গৌরবের প্রতীক
জানতে গেলে ব্যাপারে সিটি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আকতার চৌধুরী বলেন, ছবি ফাঁস হওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা গেছে, ওই নামের কোনো শিক্ষার্থী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে নেই। খাতায় শিক্ষকের যে স্বাক্ষর রয়েছে তাও আমাদের কলেজের কোনো শিক্ষকের নয়। আর ওই দিন যুক্তিবিদ্যার পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি।
আকতার চৌধুরী আরও বলেন, কেউ দুষ্টুমি করে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। পুরো বিষয়টি ভুয়া।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ ক্যথিং অং বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া। কেউ এমন কর্মকাণ্ড করে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষার অতিরিক্ত উত্তরপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘স্যার আজকে আমার মন ভালো নেই’ লেখা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সে ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও স্যার আজকে আমার মন ভালো নেই’ লেখা সংবলিত একটি ‘অতিরিক্ত উত্তরপত্রের’ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে লাল কালিতে লেখা রয়েছে ‘বাতিল’। এমনকি প্রাপ্ত নম্বর ০০ লেখা রয়েছে।
‘স্যার আজকে আমার মন ভালো নেই’
কয়েকদিন আগে ফেসবুকে ছড়ানো ওই উত্তরপত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, লোগো এমনকি বিভাগীয় সিলও রয়েছে। যার ক্রমিক নম্বর দেয়া রয়েছে ৮৫৭৪৩১।
ভাই হওয়া সেই উত্তরপত্রটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ বর্ষের ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে। যেখানে পরীক্ষার তারিখ ১২ জুন উল্লেখ করা হয়েছে।
উত্তর লেখা শুরুর স্থানে ইংরেজিতে ‘১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর’ লিখেছেন তিনি। এরপর লিখেছেন, ‘স্যার আজকে আমার মন ভালো নেই।’ এই লেখার নিচে নিজের স্বাক্ষর ও তারিখও লিখেছেন ওই শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: হজ করতে সৌদি পৌঁছেছেন ৫৩ হাজার ৩৬৭ বাংলাদেশি
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিটি আদৌতে কোনো পরীক্ষার্থীর নয়। এমনকি ১২ জুন তারিখে ওই বিভাগে কোনো পরীক্ষাও ছিল না। তাহলে কোথা থেকে এলো এই উত্তরপত্র?
সংবাদ মাধ্যমকে ওই শিক্ষার্থী জানান, বৃহস্পতিবার সকালে মজার ছলে তিনি ওই ছবিটি ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত ওই উত্তরপত্রটি কিছুদিন আগে ক্লাসরুমে পড়ে থাকতে দেখে বাসায় নিয়ে যান। এরপর ওই উত্তরপত্রে ‘স্যার আজকে আমার মন ভালো নেই’ লিখে পোস্ট করেন। অনেকে তাকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ওই পোস্ট সরিয়ে নেন। এরপরও অনেকে তা স্ক্রিনশট নিলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন:আইনের অপব্যবহার করা ইনস্পেক্টর সালামত এখনো বহাল তবিয়তে উর্ধ্বতনদের নাকের ডগায় এসব কি?
আর এতেই ঘটেছে বিপত্তি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় ডাক পড়েছে ওই শিক্ষার্থীর। ঘটনা তদন্তে আগামী রোববার (২৬ জুন) বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দফতরে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে উত্তরপত্রটি কোনো পরীক্ষার অংশ নয় বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমিন উদ্দীন সংবাদ মাধ্যমে জানান, ওই শিক্ষার্থী ভুল স্বীকার করেছেন। রোববার তাকে বিভাগে ডাকা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এমন অদ্ভুত কর্মকান্ডে বিপাকে সকলে।
সংগৃহিত : সময়ের নিউজ