চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে স্কাইল্যান্ড মোটরস জাপানী গাড়ীর লিফলেট দেখিয়ে গ্রাহকের কাছে গাড়ী বিক্রি করার পর তা আর জাপানী থাকেনা। চায়না গাড়ী দিয়ে বলে, না নিলে অগ্রিম টাকা আর দেওয়া হবেনা। দু-এক মাস যাওয়ার পর তাদের সন্ত্রাসী বাহিনি দিয়ে গাড়ী জব্দ করে খালি চেক দিয়ে কোটি টাকার মামলার হুমকি দেয় বলে জানা গেছে। এমনি অনেক ভুক্তভোগী রয়েছে।
জানা যায় গাড়ী প্রথমে বুকিং দেওয়ার সময় ফাইল করার জন্য আইডি কার্ড ২কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও মোট ৪২টি কিস্তির জন্য ৪২টি খালি চেক চায়। সহজ সরল লোকগুলো তাদের আকুতি সুলভ প্রস্তাবে রাজি হয়ে তাদের কাছে কিস্তির জন্য খালি চেক জমা রাখেন। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কয়েকমাস পর তারা শুরু করেন প্রতারনা। গাড়ী রাস্তায় চলার উপযোগী না হওয়ায় কোন আয় না আসায় গ্রাহকরা তাদের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলেই দেখা দেয় তাদের আসল চেহারা। অনুসন্ধানে উঠে আসা একজন ভুক্তভোগী জানায় প্রথমে তিনি স্কইল্যান্ড মোটরস এর অফিসে তার আটটি খালি চেক দিলেও তারা সেগুলো কোন দিন ব্যাংকে জমা দেন নাই। ভুক্তভোগীর মোট ৮টি তাদের কাছ জমা থাকা চেক গুলোর নম্বর হল যথাক্রমে ৫১৭৯৮৩১,৫১৭৯৮৩২, ৫১৭৯৮৩৩, ৫১৭৯৮৩৪, ৫১৭৯৮৩৫, ৫৭৯৮৩৬, ৫১৭৯৮৩৭, ৫১৭৯৮৩৮।
অনুসন্ধানে উঠে আসে আরো প্রতারনার খবর। ফাইল করার সময় “মাসিক কিস্তি পরিশোধের শর্তে গাড়ী ক্রয়ের আবেদন” একটি ফরমে কোন গ্রাহকের কোন স্বাক্ষর নেয়না কিন্তু কিস্তির চুক্তিনামায় ঠিকই স্বাক্ষর রাখে । কাগজপত্রে প্রস্তুতকারক সুকন মোটরস জাপানী ও গাড়ীটি ডিজেল দেখালেও পরে তা আর হয়ে যায় চীন ও অকটেন। প্রথমে অগ্রিম টাকার নেওয়ার পর দেখা যায় প্রায় ৪/৫ মাস পরেও গাড়ী ডেলিভারী দেয়না।
তারা ইন্ট্রাকো সিএনজি থেকে গাড়ীটি গ্যাসে পরিবর্তন করার কথা থাকলেও সেখানেও তারা প্রতারনা করে গাড়িটিকে মেসার্স আলম এন্ড কোম্পানী মনচুরাবাদ থেকে গ্যাস করে দেয়।
যা হোক গাড়ীটি কোন রকমে গ্রাহকের কাছে পৌচানোর পর তাদের শুরু হয় রোড চাাঁদবাজি। যে কোন রোডে গাড়ী চালাতে হলে তাদের দিতে হবে ১০ হাজার টাকা করে। গাড়ি ঠিকমত না চলায় ডিস্টিবিউটার করার জন্য নেয় ২৫ হাজার টাকা। দেখা যায় কয়েকদিন চলার পর গাড়ী জটিলতা দেখা দিলে গাড়ীর হেড পাল্টানোর কথা বলে। তাদের হেডটির বাজার মূল্য মাত্র ৫ হাজার টাকা আর গাড়ীতে যে ইঞ্জিন লাগাতে বলে তার দাম ১ লক্ষ টাকা।
এদিকে গাড়ীটি রাস্তায় চলাচল শুরু করলে তাদের কথামত প্রতি মাসে আমার ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও গাড়ীর মালিককে না জানিয়ে তারা রাস্তায় তাদের লোকের মাধ্যমে ড্রাইভার থেকে অল্প অল্প করে কিস্তির টাকা নিয়ে যায়। যার কারনে গাড়ীর মালিকের দেয়া খালি চেকগুলে া মেসার্স স্কাইল্যান্ড মোটরস এর অফিসে থেকে যায়।
এদিকে গাড়ীর কোন গ্রাহক গাড়ীর ইঞ্জিন পরিবর্তন বা কোন কাজ করাতে না পারলে কৌশলে অফিস সহকারী স্বপন তাদের ডিস্টিবিউটার মিলে গ্রাহকে ফুসলিয়ে তাদের কাছে গাড়িটি নিয়ে যায়। এবার তারা গাড়িটি অন্য রোডে পরিচালনা করে বা তাদের কাছে গোপনে রেখে দিয়ে গ্রাহকের কাছে প্রতিমাসের কিস্তি দাবি করে। আর কিস্তি দিতে না পারলে শুরু হয় খালি চেকে বিভিন্ন অংকের টাকা বসিয়ে মামলার হুমকি।
জানা যায় ভুক্তভোগী তার গাড়ীটির কিস্তি ঠিক মত দিতে না পারায় তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে অফিস ইনচার্জ মো: স্বপন ও ডিস্টিউিটার মো: মনির ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনি দিয়ে ভয় দেখিয়ে তার কাছে থেকে তাদের অফিসে জমা থাকা ৫১৭৯৮৩৫ নং চেকে ৮৭৩০০০ (আট লক্ষ তিয়াত্তর) হাজার টাকা লেখে নেয় এবং বাকি চেকগুলো চাইলেও অফিস সহকারী মো: স্বপন আমাকে চেকগুলো দেয়নাই। পরে দেখা যায় একটি গাড়ীর মোট লেনদেন নগদ ৯.৫০ (নয় লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা আর কিস্তি বাবদ ১২ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা লেনদেন থাকলেও তারা গাড়ী আটকিয়ে তাদের কাছে থাকা চেক দিয়ে ২টি চেকে মোট ৩০,০০০০০ (ত্রিশ লক্ষ) টাকা জমা দেয়। অন্য চেক দিয়ে আরো কোটি টাকার মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। এছাড়াও এনিয়ে কোন জামেলা করলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করতে থাকে এবং লোক মারফত মেরে লাশ গুম করে ফেলার ও পরিবারে লোকজনকে অপহনের হুমকি দেয়। এনিয়ে থানায় অীভযোগ করলে বা মামলা করলে তাদের ক্ষমতা বেশী থাকায় কোন গ্রাহক তেমন কিছু করতে পারেনা। শেষে ভুক্তভোগী স্কাইল্যান্ড মোটরস এর এমডির কাছে গেলে তিনি তার কাছে থাকা পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে মেরে ফেরার হুমকি দেয় এবং বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ী করলে আমাকে বাচতেও দিবেনা মর্মে হুমকি প্রদান করে। পরে সে বলে সাবক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খাঁন ও শামীম ওসমান এবং হাজি সেলিমের খাস লোক আমি। বাংলাদেশে এমন আমার নামে কয়েকশ মামলা রয়েছে হাজার কোটি টাকা খেয়েছি কেউ আমাকে কিছু করতে পারেনি। পরে এনিয়ে মাননীয় ম্যাজেষ্টেট আদালতে একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। যার মামলা নং- সিআর-১১২/১৮।
আরো জানা যায় মামলা পরবর্তী অফিস ইনচার্জ মো: স্বপন আমার নামে একটি ফাইল তৈরী করে। সেখানে তিনি বিক্রয় কারী প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা ও গ্রাহকের অঙ্গিকার নামা, মাসিক কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে গাড়ী ক্রয়ের আবেদনে অনুমোদনকারীর স্বাক্ষর করে বিভিন্ন সময় উল্যেখ করে নকল ড্রাইভার দিয়ে আমার নামে বকেয়া কিস্তির নোটিশ প্রদান করে। এদিকে জালিয়াতির মূল হোতা অফিস সহাকারী মো: স্বপন গ্রাহকের অঙ্গিকার নামায় উল্যেখ করে যে তাদেরকে আমি ১টি চেক প্রদান করা হয়েছে। যদি ১টি চেক প্রদান করি তাহলে কোথায় থেকে প্রতারক মো: মনিরের নামে ভুক্তভোগীর হিসাব নম্বর ৪৪৮২২ ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখায় আরো ২টি চেকে ৫১৭৯৮৩৭ নম্বরে চেকে ১০ লক্ষ টাকা ও ৫১৭৯৮৩৮ নম্বর চেকে ২০ লক্ষ টাকা লিখে ব্যাংকে জমা দেয়। তার পর আরো ভয় দেখাতে থাকে এবং মামলা তুলতে বাধ্য করে। মামলাটি তুলে ফেললে তারা শুধু চেকগুলো ফেরত দেয় আর ভুক্তভোগীকে কৌশলে তাদের অফিসে নিয়ে সেখানে আটকিয়ে ও ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এ ষ্টাম্পে কি লেখা ছিল তা তাকে দেখানো হয়নি।
দেখা যায় তারা এসব প্রতারনা করে হাজার কোটি টাকা খেয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতারনা, খালি চেক দুর্নিতি এসব অভিযানে এসব প্রতারকদের ধরে শাস্তি আওতায় আনতে ও গরীব অসহায়দের পাশে থাকতে গনতন্ত্রবান্ধব মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
আরো বিস্তারিত আসছে দেখতে চোখ রাখুন-