Wednesday, May 15বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

সৈয়দ আশ্রাফ না ফেরার দেশে চলে গেলেন

আওয়ামীলীগ আমার হৃদয় আমার জীবন। এটি আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা সেয়দ আশ্রাফের। তিনি ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বামরুগ্রাদ হাসপাতালের ১১৩২ নম্বর কেবিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী সহকারী প্রেস সচিব ইমরুল কায়েস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। গুরুতর অসুস্থতার কারণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নেন তিনি। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর মারা যান আশরাফ পত্মী শিলা ইসলামও। তিনি থাকতেন যুক্তরাজ্যে। তিনিও ভুগছিলেন জটিল রোগে। স্ত্রী বিয়োগের ব্যাথায় কাতর আশরাফের শরীরেও মারণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বৃহস্পতিবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শপথ নেওয়ার জন্য সময় চেয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর শপথ নেওয়া হলো না তার। স্পিকারকে চিঠি দেওয়ার পরদিনই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তিনি।

গত বছরের ৩ জুলাই চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে থাইল্যান্ডে যান আশরাফ। তার শারীরিক অবস্থা সঙ্গীন- এই অবস্থাতেও তাকে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ। আর টানা পঞ্চমবারের মতো তাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে জনগণ জানিয়ে দেয়, তাদের মণিকোঠায় ছিলেন আশরাফ।

১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেন আশরাফ। রাজনীতিতে জড়ান ছাত্র জীবনেই। ছিলেন অবিভক্ত ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর যুক্তরাজ্য চলে যান আশরাফ। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ভোটে দাঁড়ান। ওই বছরই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে জেতেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন তিনি।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আশরাফকে নিয়ে নেতিবাচক কোনো খবর নেই। তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জটিল পরিস্থিতিতে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। একজন আশ্রাফ আর একজন নেতা যিনি অপুরনীয় একটি দেশের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *