Monday, April 29বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

বন্যাঢ্য ক্যারিয়ারে জীবন সৈয়দ আশরাফের

সবশেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালে ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এমনকি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নেন, ছিলেন মুক্তি বাহিনীর একজন সদস্য। স্বাধীনতার পর বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহপ্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর আর দেশে থাকা হয়নি, চলে যান যুক্তরাজ্য। কিন্তু রক্তে রাজনীতি মিশে থাকার কারণে প্রবাস জীবনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

যুক্তরাজ্যে বসবাসের সময় বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন তিনি। এমনকি সে সময়ে লল্ডনে যুবলীগের সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া ফেডারেশন অব বাংলাদেশি ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের (এফবিওয়াইইউ ) শিক্ষা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

পরে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ সরকারের সেই মেয়াদে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও তিনি নির্বাচিত হন। এবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া সে সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হলে সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সৈয়দ আশরাফ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে জেতেন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এরপর ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

কিন্তু নববির্বাচিত এমপি হিসেবে শপথ না নিয়ে চলে যান ওপারে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নেই নেতিবাচক কোনো খবর। তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাই দেশের জন্য ও তার দলের জন্য ভালবাসায় সিক্ত এই লোকটির জন্য হয়তো আমাদের ভালবাসা ছাড়া আর কিছুই দেবার নেই। ভাল থেক ঐপারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *