Wednesday, May 15বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা প্লট চেয়ে গৃহায়ন মন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠি ফেইসবুকে ভাইরাল

বার্তা প্রতিনিধি: বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা প্লট চেয়ে গৃহায়ন মন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে ।

রুমিন ফারহানা ওই চিঠি মন্ত্রণালয় থেকে বাইরে যাওয়ার পেছনে ‘সরকারের হাত’ রয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেছেন, “আমি এখন চ্যালেঞ্জ করব। যতজন এমপি এপ্লিকেশন করেছেন সব প্রকাশ করা হোক। রুমিন কেন একলা?

রুমিন ফারহানা গত ৩ অগাস্ট রুমিন ফারহানার স্বাক্ষরে সংসদ সদস্যের প্যাডে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর বরারবর ওই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা শহরে তার নামে কোনো ফ্ল্যাট বা জমি নেই। ওকালতি ছাড়া তার অন্য আর কোনো ব্যবসা বা পেশা নেই। এ জন্য ঢাকার পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় তার ১০ কাঠার একটি প্লট প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, আপনার নিকট আমার আবেদন, আমার নামে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ করলে আমি আপনার কাছে ‘চির কৃতজ্ঞ’ থাকব।

রুমিন ফারহানা একাদশ জাতীয় সংসদকে ‘অবৈধ’ বলে আসা রুমিন ফারহানা সংরক্ষিত আসনের এমপি হিসেবে নিজেই সংসদে যোগ দেওয়ার পর বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

তিনি সংসদে যোগ দিয়ে প্রথম দিনের বক্তৃতাতেও এ সংসদ ও সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করেন বিএনপির এই আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক।

বিএনপির এই সাংসদ সংসদে যোগ দেওয়ার দুই মাসের মাথায় নিজেই এমপি হিসেবে প্লটের আবেদন করায় তাকে নিয়ে এখন নতুন করে আলোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। কিন্তু কীভাবে ওই আবেদন বাইরে গেল, আর কেনই বা তা নিয়ে এত আলোচনা শুরু হল- এসব নিয়ে দারুণ ক্ষুব্ধ ডেমোক্রেটিক লীগের নেতা প্রয়াত ভাষা সংগ্রামী অলি আহাদের মেয়ে রুমিন।
বাংলার বার্তা প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ফেইসবুকে আমার যে চিঠিটা ভাইরাল হয়েছে- সেটা না অবৈধ না অনৈতিক। এই সুবিধাটা রাষ্ট্রীয় সুযোগ বা রাষ্ট্রীয় অধিকার।

রুমিন ফারহানা বলেন, একজন সংসদ সদস্য রাষ্ট্রের কাছে জমির জন্য আবেদন করতে পারেন, তিনি বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানি করতে পারেন। তিনি বেতন-ভাতা পান এবং পাঁচ বছরের জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্ট পান- এই চারটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সুযোগ। যিনি সংসদ সদস্য হবেন তিনিই এই রাষ্ট্রীয় সুযোগ পাবেন। সেজন্য আমি একটি আবেদনপত্র দিয়েছি। শুধু আমি একা নই, তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ এমপি এপ্লিকেশন দিয়েছেন।”

তিনি বলেন আমার প্রশ্ন হল- আমার চিঠিটা মন্ত্রণালয় থেকে বেরুলো কী করে? যেখানে আমার ব্যক্তিগত টেলিফোন নম্বর দেওয়া আছে।

বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানার হলফনামায়

বাবা- অলি আহাদ, মা-রাশিদা বেগম।

স্থায়ী ঠিকানা- ৫৫/১ ‘দক্ষিণ’ ফ্ল্যাট নম্বর ৩/এ; ল্যাবরেটরি রোড; নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট।

শিক্ষাগত যোগ্যতা বার এট ল, পেশা- অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

>>আয় বছরে ৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক আমানত, এফডিআরের সুদ বাবদ বার্ষিক আয় ৩৪ হাজার ১০০ টাকা; আইন পেশায় ৪ লাখ টাকা।

>> অস্থাবর সম্পদ: ব্যাংকে আছে নগদ ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪২২ টাকা। ৫ লাখ টাকার এফডিআর আছে। এছাড়া আছে ১০ ভরি স্বর্ণ।

>> স্থাবর সম্পদ: মায়ের কাছ থেকে পাওয়া ১৮৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

২০১৮ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিভিন্ন ধারায় তিনটি মামলা রয়েছে রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে।

এই সংসদ সদস্য বলেন, “আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমি এই সরকারের কাছ থেকে এক সুতা জমিও আশা করি না, আমি চিন্তাও করি না। এটা একটা প্রসিডিউর, একটা ফরমালিটিজ- যেটা সব এমপি করেছেন, আমিও করেছি।”

তবে সংরক্ষিত নারী আসনের এই এমপি দাবি করেন, ওই চিঠির খসড়া তৈরি করেছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী, যেমনটা সব এমপির ক্ষেত্রে করা হয়।

তিন প্রশ্ন করে বলেন কিন্তু আমার চিঠিটা কেন ভাইরাল হল? এটা ভাইরাল কেন হল তার উত্তর আমি নিজেই দিচ্ছি। আবুল মাল আবদুল মুহিত (সাবেক অর্ধমন্ত্রী) কোনো পদে না থাকা অবস্থায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি এনেছেন। সরকার তার সেই নোংরামি ও অসততাকে চাপা দেওয়ার জন্যে আমার বৈধ এপ্লিকেশন নোংরাভাবে পাবলিক করেছে। একটা সরকারি নথি যখন পাবলিক হয়, তখন সেখানে সরকারের মদদ থাকে।”

তিনি বলেন যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, যারাই সরকারের কাজের সমালোচনা করে, যারাই সরকারকে সঠিক পথে আনার জন্যে কথা বলবে এবং সরকারের মনমত কথা বলবে না, তাদের কোনো না কোনোভাবে ‘হেনস্তা করার’ এক ধরনের চেষ্টা সরকারের থাকে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই সাংসদ।

তবে প্লট চেয়ে রুমিন ফারহানার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনিসহ অনেকে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সূত্র: বিডি ট্রিবিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *