Wednesday, May 8বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

রানা বাংলাদেশের দ্বিতীয় রসুখাঁ প্রার্থক্য শুধু হত্যা আর ধর্ষন

বার্তা ডেস্ক: একজন ধর্ষক আর সে প্রতারকও বটে। নারিদের মায়াজালে বন্ধি করে তাকে ধর্ষন করাই তার কাজ। অভিনব এই ধর্ষকের নাম জসিম উদ্দিন রানা। বাংলাদেশের আলোচিত সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর সঙ্গে তার পার্থক্য এতটুকুই যে, রসু খাঁ ধর্ষণের পর হত্যা করত, আর রানা শুধু ধর্ষণ করেছে। ২৩ বছর বয়সী রানার অপকর্মের হাতেখড়ি মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই। ৯ বছরে রানার লালসার শিকার হয়েছে কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সী প্রায় ৪৮ নারী।

আর এই ধর্ষকেরও শেষ হয়েছে ইচ্ছা আর মানবতার অবক্ষয়। তারও শেষরক্ষা হয়নি। দ্বিতীয় স্ত্রী সুরভী আক্তারকে (১৯) গলাটিপে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার রানা আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার অপকর্মের কথা স্বীকার করে। রানা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা করমজাতলা এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে রানা দ্বিতীয় স্ত্রী সুরভী আক্তারকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ সময় রানা বিভিন্ন বয়সী ৪৮ নারীকে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করে। রানা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করত।

এদেকে আদালতে রানার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।

জানা যায় গত বৃহস্পতিবার রাতে রানা তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুরভীকে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার দক্ষিণবাজার এলাকার ভাড়া বাড়িতে ঘুমের উষধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পুলিশ সোমবার রাতে তাকে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।

নারায়ণগঞ্জের আদালত সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১৫ বছর বয়সেই বখে যায় রানা। সে স্কুলজীবন থেকেই বিভিন্ন কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করত। এ কারণে এলাকাছাড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত। আর যেখানেই যেত সে এলাকার নারীদের কথার মায়াজালে ফেলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ধর্ষণ করত।

তার জীবন কাহিনি থেকে জানা যায় ২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নোনদা এলাকার নান্নু মিয়ার মেয়ে নাজনীন বেগম প্রেমের টানে রানার কাছে চলে এলে সে তাকে নকল কাজির মাধ্যমে বিয়ের নাটক সাজিয়ে সংসার শুরু করে। ওই সংসারে পারভীন নামে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

কলাপাড়া থেকে পালিয়ে সে সাভার চলে আসে। সেখানে মোবাইল ফোনে নকল প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে মাদারীপুরের সদর উপজেলার চরমুগুরিয়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সুরভী আক্তােেরের সঙ্গে। সৌরভী প্রেমের টানে তার কাছে চলে এলে এবারও নকল কাজি দিয়ে বিয়ে করে সংসার শুরু করে রানা। কিন্তু বিয়ের ব্যাপারটি রানার কয়েকজন প্রেমিকা টের পাওয়ায় সে সাভার থেকে দুই মাস আগে রূপগঞ্জে চলে আসে। এখানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে কাঞ্চন বাজারের মনির মাস্টারের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস শুরু করে।

রানার দ্বীতিয় স্ত্রী সুরভি নকল বিয়ে ও বহু নারীর সঙ্গে রানার অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আসল কাবিন করতে চাপ দেয়। এতে রানা সুরভীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

গত বৃহস্পতিবার রাতের খাবারের পর কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে সুরভীকে পান করিয়ে অচেতন করে। এরপর শ্বাসরোধে হত্যা করে বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। সুরভীর মৃত্যুর খবর শ্বশুর দেলোয়ার হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানায় সে।

রানা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় সুরভীর বাবা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
সূত্র: সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *