Monday, April 29বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

বিমান চিনতাইয়ের ঘটনার দিন স্ক্যানিংয় মেশিন নিরব ছিল মনে হয়

বার্তা প্রতিনিধি: বিমান চিনাতাই তো হবার কথা না। কারন বিমান বন্দর নিরাপত্তার চাদরে
ঢাকা থাকে সবসময়। কিন্তু সেদিন ময়ূরপঙ্খি ছিনতাইচেষ্টায় পলাশের ব্যাগ স্ক্যানিংয়ে অস্ত্রের অস্তিত্ব ধরা পড়ল না কেন ঘুরে ফিরে এ প্রশ্ন সামনে চলে আসছে এয়ারপোটের নিরাপত্তা নিয়ে। সব আলোচনা হচ্ছে উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনায় জব্দ করা খেলনা পিস্তল নিয়েও। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের প্রশ্ন- অস্ত্রটি খেলনা হোক আর আসল হোক তা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের লাগেজ স্ক্যানার মেশিনে ধরা পড়ার কথা। কিন্তু কেন ধরা পড়ল না।

তাদের প্রশ্ন, তা হলে কি লাগেজ স্ক্যানার মেশিন ঠিকমতো কাজ করছিল না? সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বলছেন, লাগেজ স্ক্যানার মেশিন ঠিক আছে। ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র বিভিন্ন কাগজে মুড়িয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন মেশিন ঠিক আছে।

আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, ময়ূরপঙ্খি ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জব্দ প্লাস্টিকের খেলনা পিস্তল, বোমাসদৃশ দুটি ব্যাটারি ও সার্কিট সবই অকার্যকর।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে আসার পথে ছিনতাই চেষ্টাকালে এ পিস্তলটি পলাশ আহমদের হাতে ছিল বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা সে সময় এবং পরে একাধিক প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে দাবি করেন। এ ছাড়া উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টাকারী নিহত পলাশের সঙ্গে থাকা ব্যাগে তার ব্যবহারের কাপড়চোপড়ও জব্দ করা হয়। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপকের জিম্মায় জব্দ দেখানো হয়েছে ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটিও।

গত মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো বাহিনীর কাছ থেকে এ আলামত গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া। চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট জহুরুল হক ঘাঁটিতেই এ খেলনা পিস্তল ও বোমাসদৃশ বস্তু গত তিন দিন ধরে ছিল।

জানা গেছে, খেলনা পিস্তলটির গায়ে লেখা আছে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। এতে কোনো ধরনের ধাতব স্ক্রু নেই। প্রায় ৭ ইঞ্চি লম্বা খেলনা পিস্তলটির ওপরের দিকে দুই জায়গায় কালো টেপ মোড়ানো। সার্কিটে ব্যবহৃত লাল পাইপের সঙ্গে ৭ ইঞ্চি লম্বা ও ১ ইঞ্চি উচ্চতার সার্কিট সংযুক্ত, যাতে ২৪টি এলইডি বাল্ব আছে। এগুলোর সবই অকার্যকর।

নগর পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, খেলনা পিস্তলের ভেতরে কোনো ধাতব স্ক্রু না থাকলে তা স্কানিংয়ে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই একে একটি কৌশল হিসেবেই দেখছেন তারা।

জানা গেছে, পলাশের কাছে পাওয়া আলামতের একটি তালিকা র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে পতেঙ্গা থানা পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু উপাদান জব্দ হওয়ার আগেই এ ধরনের একটি তালিকা গ্রহণ করতে চায়নি পুলিশ। ওই তালিকায়ও পলাশের কাছ থেকে উদ্ধার করা বস্তুগুলোয় কোনো ধরনের বিস্ফোরক জাতীয় উপাদান পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কাউন্টার টেররিজমের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া আমাদের সময়কে বলেন, জব্দ করা উপাদানের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এসব শেষ না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শেষ হওয়া উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টা নাটকের তিন দিনের মাথায় পুলিশ এ আলামত জব্দ করে।

এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর পতেঙ্গা থানায় করা মামলায় পলাশ আহমেদের কাছে একটি খেলনা পিস্তল পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়। মামলার এজাহারে পলাশকে উড়োজাহাজের ভেতরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়। এর বাইরে চিত্রনায়িকা সিমলা ও পলাশ আহমদের বিয়ের কাবিননামার কাগজও সংগ্রহ করেছে পুুলিশের কাউন্টার টেররিজম। তবে সিমলা ভারতে থাকায় তাকে সরাসরি এখনো কিছু জিজ্ঞাসা করা যায়নি। তবে এক ফেসবুক বার্তায় নায়িকা সিমলা বলেন ঘটনাটি দুঃখ জনক।
সূত্র: আমাদের সময়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *