Wednesday, May 8বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

ধনী হওয়ার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে, চট্টগ্রামে বানিজ্য মেলা উদ্ভোদনে বাণিজ্যমন্ত্রী

বার্তা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৮তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। এই সময় তিনি বলেন, ভারত চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে তাদের পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে চায়। ভারতের পাশাপাশি নেপাল ভুটানও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে চায়। কারণ চট্টগ্রাম বন্দর শুধু বাংলাদেশের বাণিজ্যক রাজধানীই না, চট্টগ্রাম হলো বাণিজ্যের গেটওয়ে।

মন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৮তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের পণ্য গুদামজাত প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, কেউ অনেক ধনী হবেন আর কেউ না খেয়ে থাকবেন, এজন্য বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়নি। সেটি খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের ভাবতে হবে। পণ্য গুদামজাত করে মানুষকে জিম্মি করে ধনী হওয়ার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। এতে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সুনামও বৃদ্ধি পাবে। চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপ মন্ত্রী ব্যরিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম ১১নং আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান।

ব্যরিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমরা গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থার মানসিকতা থেকে বের হতে পারছি না। তবে আগামী ২০২১ সালে এর পরিবর্তন আসছে। কারণ সরকার একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল নলেজ বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনছে। আগামী বছর ২য় শ্রেণি থেকে প্রাক বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম শুরু হবে।
ব্যবসা বাণিজ্য ও রাষ্ট্রীয় কাজ ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, আমাদের কর্পোরেট হাউজগুলো ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। সব নামকরা প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট হাউজ ঢাকায়। এছাড়া যে কোন সরকারি কাজের জন্যও ঢাকার উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। তাই আমাদের এসব কাজকে বিকেন্দ্রিক করতে হবে।

২৭ বছর আগে শুরু হওয়া চট্টগ্রাম জাতীয় আন্তর্জাতিক মেলা এখনো কোন স্থায়ী জায়গা পায়নি মন্তব্য করে এম এ লতিফ বলেন, আমাদের কোন আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার নেই। মেলা করার স্থায়ী কোন জায়গা নেই। চট্টগ্রামে অনেক মেগা প্রজেক্টেও কাজ চলছে। বড় বড় ইপিজেড হচ্ছে, গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে, বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা টার্মিনাল হচ্ছে। কিন্তু যদি টেকনিক্যাল মানুষ তৈরি না হয় তাহলে এসব মেগা প্রজেক্ট ভেস্তে যাবে। হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ মানুষের কাজে আসবে না।

এদিকে খাতুনগঞ্জের ব্যবসা প্রসঙ্গে লতিফ বলেন, মজুদদারি ব্যবসা এখন শুধু খাতুনগঞ্জের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ঢাকার ব্যবসায়ীরাও এখন পণ্য মজুদ করে। যদি কাস্টমস থেকে তথ্য নিয়ে যাচাই বাছাই করা হয়, কে কি পণ্য কতটুকু পরিমাণে আনছে এবং কাদের কাছে বিক্রি করছে। তাহলে আর ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে দোকানে দোকানে অভিযান চালাতে হবে না।
চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বিশ্ব পরিচিতি পেয়েছে মন্তব্য করে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, চট্টগ্রামের বাণিজ্য মেলা সম্পর্কে বিশ্ব এখন পরিচিত। ২৮ বছর ধারাবাহিকভাবে এতো বড় আয়োজন করা সহজ কাজ নয়।

তিনি বলেন, দেশের দারিদ্র সীমা ৪৬ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ এ নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের নিরাপত্তা দিতে আমরা সদা প্রস্তুত। আমরা গর্ব করে বলতে পারি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হয় না।

মেলার উদ্বেধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ জামাল আহমেদ। উদ্বোধন শেষে অতিথিরা সিআইটিএফের বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন।
এবারের মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, প্রোটন, প্রাণ, আরএফএল, মি. নুডলস, ইস্পাহানী, পেডরোলো, হাতিল, নাভানা, নাদিয়া, আখতার, নাদিয়া, নিউ এনটিক ফার্নিচার, ইজি বিল্ড, ফরেন প্যাভিলিয়ন, ফরেন জোন, থাই প্যাভিলিয়ন, পুনাক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, প্যান্ডা আইসক্রিম, বেঙ্গল প্লাস্টিক, কিয়াম, বিআরবিসহ চারশ প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। মাসব্যাপী এই মেলা খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
সূত্র: দৈনিক পূর্বকোন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *