বার্তা প্রতিনিধি: প্রতারনার পাঁদ পাতানোর ঘটনায় মেয়েদেরকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলিং করে একটি চক্রের তিন সদস্যকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তাকে কৌশলে বাসায় ডেকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে খুলশী থানা পুলিশ।
গত শুক্রবার সকালে নগরীর বিশ্বকলোনীর ডি-ব্লকের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানির ওই কর্মকর্তাকেও উদ্ধার করা হয়।
ওষুধ কোম্পানীর উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম হাসান তারেক (৩৭)। তিনি নগরীর পাঁচলাইশ থানার রহমান নগরের হাতিম বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা মোফাজ্জল আহমেদের ছেলে। তিনি রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন।
এদিকে প্রতারনার দায়ে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ইফতেখারুল আলম (২৫), মোহাম্মদ তালিম উদ্দিন (২৪) ও সালেহিন আরাফাত (২৮)। তিন যুবকই নগরীর বিশ্বকলোনী এলাকার অভিজাত পরিবারের সন্তান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। তারা একটি ব্ল্যাকমেইলিং চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় হাসান তারেকের বোন প্রেসিডেন্সি স্কুলের শিক্ষিকা শারমিন ফারজানা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
খূলশি থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায় গ্রেফতারদের মধ্যে ইফতেখারুল আলম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চট্টগ্রাম কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তালিম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। সালেহিন আরাফাত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগেরর শেষ বর্ষের ছাত্র। পাশাপাশি সালেহীন তার বাবার সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেন।
প্রতারনা ও মেয়েদের টোপ হিসেবে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে খুলশী থানার ওসি প্রনব চৌধুরী বলেন, দুই সপ্তাহ আগে হাসান তারেক কোম্পানি কাজে বিশ্বকলোনীতে যান। সেখানে ইশরাত নামে এক মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে কথাবার্তা হতো। বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েটি হাসান তারেককে বিশ্বকলোনীর ডি-ব্লকের নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। বাসায় যাওয়ার পর চার যুবক সেখানে প্রবেশ করে এবং তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করেন। মুক্তি পেতে হাসান তারেক প্রথমে বিকাশের মাধ্যমে ২৪ হাজার টাকা দেন। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট হননি জড়িতরা। তারা আরও টাকা দাবি করলে ভোরের দিকে হাসান তারেক তার ছোট বোনকে দুটি চেক নিয়ে খুলশীতে ইউএসটিসির সামনে আসতে বলেন। এসময় হাসানের কণ্ঠস্বর শুনে বোনের সন্দেহ হলে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চান।
খুলশী থানার একটি টিমও ছদ্মবেশে ইউএসটিসির সামনে অবস্থান নেয়। তালিম চেক নিতে এলে পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এরপর তার দেওয়া তথ্যমতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে হাসানকে উদ্ধার করা হয় এবং অপর দু’জনকেও আটক করা হয়। তবে ইসরাত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে ইসরাতকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
পুলিশ এই চক্রের সাথে আরো কেউ জড়িত আছেকিনা তা খতিয়ে দেখছে।