Monday, April 29বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

চট্টগ্রামে ফয়সলেকে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছে ‘প্রাকৃতিক বন’ চিড়িয়াখানা

বার্তা প্রতিনিধি: পাহাড়ে বেষ্টিত চট্টগ্রাম শহর। এখানে রয়েছে একমাত্র চিড়িয়াখানা চট্টগ্রাম ফয়সলেকে। আর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাহাড় ঘিরে তৈরি করা হচ্ছে ‘প্রাকৃতিক বন’। দর্শনার্থীদের খাঁচাবিহীন প্রাণী ও পাখি দেখার সুযোগ করে দিতে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ‘প্রাকৃতিক বন’ নির্মাণ করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে চিড়িয়াখানা বেষ্টিত ৩ একর পাহাড়জুড়ে চলছে এ বন নির্মাণের কাজ। পাহাড়জুড়ে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া এ নির্মাণ কাজের প্রথম ধাপে চলছে ৬৭০ ফিট গাইড ওয়াল ও সিঁড়ি নির্মাণের কাজ।
এছাড়া বন্য প্রাণী ও পাখিদের বাসযোগ্য স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে এ ‘প্রাকৃতিক বনে’ লাগানো হয়েছে নানা ধরনের ফুল ও ফলের গাছ। অতিথি পাখিদের আগমনের কথা মাথায় রেখে পাহাড়ের বুকে খনন করা হবে একটি পুকুরও। এতে করে দেশীয় নানা জাতের পাখি এবং প্রাণীদের আগমনে এক অভয়ারণ্যে রূপ নিবে বলে ধারণা করছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তবে খাঁচাবিহীন এসব পশু পাখিদের সংস্পর্শে যেতে পারবে না দর্শনার্থীরা। কেননা দর্শনার্থী ও পশু-পাখিদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এ বনজুড়ে যে চলাচলের পথ নির্মাণ করা হবে তার দুপাশ ঘিরে দেয়া হবে লোহার তৈরি (জাল) বেড়া দিয়ে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কিউরেটর ডা. মো. শাহাদাত হোসাইন শুভ পূর্বকোণকে বলেন, ‘একটা সময় এই চিড়িয়াখানায় প্রায় ১৬ প্রজাতির পাখির আনাগোনা ছিলো। তবে এখন কেবল মাত্র কাক, শালিক আর চড়–ই ছাড়া অন্য পাখির দেখা পাওয়া যায় না। এছাড়া বন বিড়াল, বাদুড়, বাগডাশ ও বন মোরগসহ মায়া হরিণেরও দেখা মিলতো চিড়িয়াখানার পিছনের অংশটিতে। তবে খাবার সংকটসহ প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণে এসব পাখি ও প্রাণীদের এখন আর দেখা যাচ্ছে না। তাই এসব পাখি ও প্রাণীদের চিড়িয়াখানার মধ্যেই একটি উন্মুক্ত আবাসস্থল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যা সম্পন্ন করতে সর্বমোট ব্যয় হবে প্রায় ৪০ লাখ টাকা।
ইতিমধ্যে চিড়িয়াখানার পিছনে থাকা ৩ একর পাহাড়জুড়ে চলছে প্রাকৃতিক এ বন নির্মাণের কাজ। যেখানে পশু-পাখিদের খাবারের চাহিদা পূরণ ও বাসস্থান তৈরির জন্য লাগানো হয়েছে ফুল ও ফলের গাছ। যেখানে লাগানো আম, জাম, পেয়ারা, লিচু, আমলকি, কামরাঙ্গা ও বাদাম গাছগুলো পাখি ও প্রাণীদের খাবারের চাহিদা পূরণ করবে। এছাড়া কৃষ্ণচূড়া, হাসনা হেনা, বকুল ফুল ও কাঁশ ফুলসহ প্রাকৃতিক এ বনে লাগানো অন্যান্য ফুল গাছগুলোতে পাখিরা তাদের বাসস্থান গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়া অতিথি পাখিদের আগমনের কথা মাথায় রেখে এ প্রাকৃতিক বনে একটি পুকুরও তৈরি করা হবে। ফলে খাবার ও বাসস্থানের চাহিদা পূরণ হওয়ায় এ প্রাকৃতিক বনে অতিথি পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের ও প্রাণীদের বিচরণ ঘটবে। এতে করে অভয়ারণ্যে রূপ নিবে এ প্রাকৃতিক বন। যেখানে দেখা মিলবে দোয়েল, ময়না, টিয়া, ঘুঘু ও বন বিড়াল, বাদুড়, বাগডাশ, বন মোরগসহ মায়া হরিণের।
তিনি আরো বলেন, গত দেড় বছর আগে চিড়িয়াখানায় আগত দর্শনার্থীদের উন্নত দেশগুলোর মতো খাঁচাবিহীন পশু-পাখি দেখার সুযোগ করে দিতে শুরু হয় এ প্রাকৃতিক বন নির্মাণের কাজ। প্রথম দিকে গাছ-পালা লাগানোর কাজ করা হলেও গত মার্চ মাস থেকে শুরু করা হয় প্রাকৃতিক বনের মূল স্থাপনার কাজ। প্রথম ধাপে চলছে গাইড ওয়াল ও সিঁড়ি নির্মাণের কাজ। ইতিমধ্যে পাহাড় ঘিরে ১০০ ফিট গাইড ওয়ালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এরপর শুরু হবে সিঁড়ি ও পথজুড়ে বেড়া নির্মাণের কাজ। আগামী জানুয়ারির মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে এ প্রাকৃতিক বন বলে জানান তিনি।
ডেপুটি কিউরেটর ডা. মো. শাহাদাত হোসাইন শুভ আরো বলেন, প্রাকৃতিক বনে পশু-পাখিদের উদ্দেশ্যে লাগানো ফল গাছগুলো যতদিন না পর্যন্ত ফল দেওয়ার উপযোগী হবে ততদিন এসব পশু-পাখিদের খাবারের যোগান দেয়া হবে চিড়িয়াখানা থেকে। এছাড়া এখানে লাগানো গাছগুলোতে পাখিদের জন্য বাসাও তৈরি করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি

সূত্র: দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *