Friday, May 3বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

কিভাবে ভুটান যেতে পারবেন, নেপাল ভ্রমণ করতে ট্রাঞ্জিট ভিসা নিয়ে বাই রোডে ভারতের ভিতর দিয়ে যেতে পারেন

বার্তা প্রতিনিধি: ভূটানকে বলা হয় সৌন্দর্যের নগরী । ভূটানে যেতে যেহেতু বাংলাদেশীদের ভিসা লাগে না তাই অসংখ্য পর্যটক প্রতিবছরই ভূটান পাড়ি জমায় । অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে কিভাবে ভূটান যেতে হয় বাই রোডে । আজকের আয়োজনটা থাকছে আপনাদের প্রশ্নগুলোকে কেন্দ্র করে । আশা করি এই লেখনির মাধ্যমে অনেকেই উপকৃত হবেন ।

রাতে শ্যামলী এস.আর বাসে করে ভূটান ঘুরে আসলাম। যাওয়ার আগে শুনতাম ছবির মতো সুন্দর একটা দেশ কিন্তু যাওয়ার পর বুজলাম তার থেকেও সুন্দর গোছানো একটা দেশ ভূটান। এবার আসি বিস্তারিত বর্ণনায়, কিভাবে যাবেন, কই থাকবেন, কি করবেন?

****প্রথমেই ভারতীয় ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হবে যা ঢাকার শুধুমাত্র গুলশান শাখা থেকে করিয়ে নিতে পারবেন। ট্রানজিট ভিসার বিস্তারিত বর্ণনা এই লিংকে। http://travelersofbangladeshandworld.blogspot.com/2016/08/blog-post.html

তারপর আগে থেকে টিকিট করে রাখা শ্যামলী বাসে উঠে পরুন । আরামবাগ থেকে রাত ৮টায় এবং কল্যাণপুর থেকে ৯টায় ছাড়ে। সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা তারমানে পরদিন সকাল ৮টার মধ্যে আপনি বুড়িমারি সীমান্তে। ৯টায় ইমিগ্রেশন অফিস খুললে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে ঢুকে পরুন ইন্ডিয়াতে। ২ সীমান্তের বর্ডারের কাজ শেষ করে আপনার জন্য অপেক্ষারত বাসটিতে উঠে পরুন ।

ভুটানের যাবার জন্য ময়নাগুরি নামক জায়গায় নেমে ১টা লোকাল বাসে উঠে পরুন ভাড়া নিবে ৩০ রুপি। ঐখান থেকে নেমে সাফারি নামের গাড়িতে উঠুন ভাড়া পড়বে ৩০/৩৫ টাকা যা আপনাকে জয়গাও ভূটান-ইন্ডিয়া বর্ডারের কাছাকাছি নিয়া যাবে। এরপর ৭টাকা ভাড়া দিয়ে অটোতে (আমাদের দেশে সিনজি) উঠে চলে যাবেন জয়গাও ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসে এবং এক্সজিট সিল লাগিয়ে সোজা চলে যান ভূটান। মনে রাখবেন ভূটান-ইন্ডিয়া ওপেন বর্ডার, যখন খুশি যাওয়া ও বের হওয়া যায়। কোন সমস্যা নেই। আমার মতে খাওয়া দাওয়ার কাজটা জয়গাও তে সেরে নেয়াই উত্তম হবে।

আমরা Phuntsholing পৌঁছাই বিকেল ৪ টাইয় এবং সেখান থেকে ১টা ৮ সিটের গাড়ি ভাড়া করি এবং সোজা চলে যাই ওদের রাজধানী থিম্পুতে। যেতে যেতে প্রায় রাত ১১:৩০। ও ভালোকথা, বাংলাদেশ এবং ভুটানের সময় একদম এক (GMT+6 ) । আমরা থিম্পুতে Yoesel Hotel 2 তে ছিলাম যার double Bed রুমের ভাড়া ছিল 700 rupee এবং triple Bed রুমের ভাড়া ছিল 9০০ rupee. গোছান, ছিমছাম হোটেল।
প্রথম দিনঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে পাশের হোটেলের রেস্টুরেন্ট Hotel Choephal Norkye থেকে নাস্তা করে নেই। এখানের খাওয়া মজার। আমাদের প্রথম দিনের নাস্তার আইটেম ছিল Cheese Egg, Parata, Dal Fry & Coffee. আমরা প্রথই দিনই থিম্পু থেকে Punakha নামক শহরে যাওয়ার permit করায় নিসিলাম যেন পরবর্তীতে কোন সময় নষ্ট না হয়।

http://travelinginbangladeshi.blogspot.com/2016/12/blog-post.html

অফিসিয়াল কাজ শেষে আমরা থিম্পুতে সিটি ট্রিপ দিলাম এর মধ্যে zoo, Dzhong, Monestry ছিল কিন্তু বুদ্ধা পয়েন্ট ছিল মনে রাখার মতন ১টা জায়গা। অসম্ভব সুন্দর ১টা শহর। দেখলেই মন ভরে যায়।

দ্বিতীয় দিন: যাত্রা এবার পুনাখা। সকাল ১০টায় রওনা দিলাম, ২/২:৩০ ঘণ্টার মতন সময় লাগে পৌছাতে। যাওয়ার পথে Duchala, Punakha Dzhong, এবং Suspension Bridge তো মাথা নষ্ট করে দেয়। আবহাওয়া অন্য শহর থেকে একটু ভিন্ন কিন্তু খুবই উপভোগ্য। কেউ ভূটান গেল, কিন্তু পুনাখা গেল না, তাহলে তার ভূটান যাত্রাই অপূর্ণ। সারাদিন ঘুরে রাতে আবার থিম্পুতে ফিরে গেলাম কারন পুনাখাতে থাকার মতন ভাল হোটেল নেই। আর থিম্পু হয়ে যেহুতু পারো যাওয়া লাগে তাই থিম্পুতে চলে যাওয়াটাই ভাল সিদ্ধান্ত।

তৃতীয় দিন: থিম্পু এবং পুনাখা দেখা শেষে এবার আমাদের যাত্রা স্বপ্নের শহর Paro এর উদ্দেশে। এখানে আমরা ছিলাম Hotel Dragon এ, এটা ইন্ডিয়ান হোটেল খুব সম্ভবত এর মালিক কলকাতার লোক। তাই এখানে সর্ব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। যেমন; সাদা ভাত, আলু ভর্তা, আলু ভাজি, শুকনা মরিচ দিয়া আলু ভর্তা, খাসির তরকারি, মুরগির তরকারি, সবজি এক কথায় পুরা ১৬ আনা বাঙালি খাওয়া তবে দাম একটু বেশি। তবে কয়েক দিন টানা ফ্রাইড রাইস আর চাউমিন খেতে খেতে আমরা অস্থির হয়ে গেচিলাম। তাই বাঙালি খাবার পেয়ে এই সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করি নাই।

http://travelinginbangladeshi.blogspot.com/2016/12/blog-post.html

এখন আসি আসল কথায়, পারো হচ্ছে ওদের সবথেকে সুন্দর শহর, এই শহরেই ওদের একমাত্র আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট আছে। থিম্পু থেকে আসার পথে অনেক সুন্দর সুন্দর যায়গা আছে যা না দেখলেই নয়। এদের মধ্যে অন্যতম হল case bridge. এটা যেমন মজার তেমনই ভয়ঙ্কর।

চতুর্থ দিন, এবার পারোর সব থেকে বড় আকর্ষণ Tiger Nest/ taksin. যেটা ওদের ধর্মীয় এবং পর্যটনের দিক থেকে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিন হাজার ফুট হেটে উঠতে হবে আবার নেমে আসতে হবে। পায়ে হাটার বিকল্প কোন বেবস্থা নাই। আমাদের উঠতে সময় লেগেছিল প্রায় ৩:৩০ ঘণ্টার মতন আবার নামতে সময় লেগেছে ১ ঘণ্টার বেশি। দিন শেষে এটাই ছিল সব থেকে মজার এবং সারা জীবন মনে রাখার মতন একটা ঘটনা।

পঞ্চম দিনঃ ভুটানের সব সুন্দর সৃতি সাথে নিয়ে এবার আমাদের গন্তব্য আরেক সৌন্দর্যের রানি দার্জিলিং। চা বাগানে ঘেরা অপুরুপ সুন্দর দার্জিলিং শুধু টিভিতেই দেখেছি কিন্তু এবার সুযোগ এসেছে সামনে থেকে দেখার। এবার রওনা হলাম পারো থেকে দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে। সকাল ১১টা। আমাদের যাত্রা শুরু। ৪:৩০/৫ ঘণ্টা সময় লাগে ফুএেন্টসলিং পৌছাতে। পথে যাত্রা বিরতি বেশি নিলে সময়তো একটু বেশি লাগবেই। অবশেষে ভূটান বর্ডার গেটে পৌছালাম স্থানীয় সময় ৫টায়। এক্সিট সিল নিয়ে হেঁটে চলে গেলাম ইন্ডিয়ার ভিতর সোজা ওদের ইমিগ্রেশন অফিসে আর লাগিয়ে নিলাম এন্ট্রি সিল। যেহুতু দারজেলিং যাব তাই রাতটা শিলিগুড়ি থাকতে হবে। ৩,৫০০ টাকায় একটা গাড়ি ভাড়া করে রওনা দিলাম এবং রাত ১০:৩০ নাগাদ শিলিগুড়ি পৌঁছে গেলাম। বলে রাখা ভাল যে ইন্ডিয়া ঢুকেই ইন্ডিয়ার ১টা মোবাইল সিম কিনি ইন্টারনেট প্যাকেজ সহ। তাই অনলাইনেই ১টা হোটেল বুক দিয়া সরাসরি উঠে পরি হোটেলে। ২ রুম, ২ রাত সর্বমোট ৩,০০০ রুপি। রাতে আরেকটা গাড়ি ঠিক করে রেখেছিলাম পরের দিন সারা দিন যেন ভালভাবে ঘুরতে পারি কোন ঝক্কি ছাড়া।

http://travelinginbangladeshi.blogspot.com/

ষষ্ঠ দিনঃ ভোর ৪:৩০ টায় ঘুম থেকে উঠে আগের দিন ঠিক করে রাখা গাড়ি করে পুরো দার্জিলিং শহরটা ঘুরে দেখলাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো Zoo, Rock Garden, Bazar, Tiger Hill. সবগুলা যায়গার মধ্যে Tiger Hill সবথেকে আকর্ষণীয়। এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখা অন্যরকম আনন্দের। বলে রাখা ভালো যে দার্জিলিং শহরে ঢাকার মতন ট্রাফিক জ্যাম হয়। সারাদিন ঘুরাফিরা শেষে এবার হোটেলে ফিরার পালা। বাস শিলিগুড়ি থেকে ছাড়ে বলে শিলিগুড়িতেই আবার ফিরে গেলাম।

সপ্তম দিনঃ গত কয়েক দিনের ক্লান্তি পুষিয়ে নেবার জন্য এবার একটা সেই ঘুম দেয়ার পালা কারন বাসতো সেই ১:৩০ টায়। যে কথা, সেই কাজ। ১০ টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে নিলাম এবং সকালে নাস্তা করলাম স্ট্রিট ফুড দিয়ে। ২০ রুপিতে ৩ টে পরটা এবং refillable ডাল। চমৎকার স্বাদ, পেটেও তৃপ্তি, জিহ্বাতেও তৃপ্তি। হাল্কা ঘুরে, বিধান মার্কেটে শপিং করে বাসে উঠে গেলাম। গন্তব্য এবার বাংলাদেশ।

http://travelinginbangladeshi.blogspot.com/

**খরচাপাতি :

জনপ্রতি আপনার খরচ পড়বে ১৫-২০ হাজার টাকা (শপিং ছাড়া)।
মনে রাখা ভালো, সময় স্বল্পতার জন্য আপনি হয়তো হাভেলি ও বুম্থাং-এর মতো আকর্ষণীয় জায়গায় যেতে পারেননি। হাভেলি, বুম্থাং ঘুরলে খরচ কিছুটা বাড়বে।

আর সব কিছুতে ট্যাক্সি বাদ দিয়ে পাবলিক বাসে ঘুরলে খরচ কিছু কম পড়বে কিন্তু সময় বেশি লাগবে।

**কিছু লক্ষণীয়

১. ভারতীয় ভিসাসহ পাসপোর্টের ফটোকপির কয়েক কপি, আর পাসপোর্ট সাইজের ছবি সঙ্গে রাখবেন।
২. ন্যাশনাল আইডি কার্ডের দু-তিনটি ফটোকপি।
৩. চাকরিজীবী হলে NOC (No Objection Certificate) ও স্টুডেন্ট হলে আইডি কার্ডের দু-এক ফটোকপি।
৪. ভুটানে সরকারি ছুটি অনেক বেশি, তাই সরকারি ছুটির লিস্ট দেখে ভ্রমণ প্লান করলে ভালো।
৫. ভুটানে কোথাও কোনো মসজিদ ও মুসলিম রেস্টুরেন্ট আপনার চোখে পড়বে না। ভুটানিজ ভাত, ডাল, সবজি খুবই মজার। তারপরও আপনার প্রয়োজন মনে হলে, বাংলাদেশ থেকেই কিছু, আচার, চাটনি, বিস্কুট নিয়ে যেতে পারেন।
৬. ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা, ভুটান শতভাগ ধূমপানমুক্ত দেশ। কিন্তু সবার জন্যই খোলা। কোথাও কোনো সিগারেট কিনতে পাবেন না, ধূমপানের মতো বদভ্যাস থাকলে সিগারেট সঙ্গে করে নিয়ে নেবেন। পরবর্তী সময়ে তা বারে (smoking zone), হোটেলে অথবা পাহাড়ে ধূমপান করতে পারবেন, কিন্তু ধরা পড়লে কোনো কথা নেই, নগদ মোটা অঙ্কের জরিমানা। তবে ধূমপান না করাই ভালো।
৭. নিজস্ব প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বাংলাদেশ থেকেই নিয়ে গেলে ভালো।

ভ্রমণ কর বা Travel Tax নিয়ে অনেকের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন থাকে যেমন কারা ভ্রমণ কর দিবেন, কত টাকা দিবেন, কোথায় দিবেন, কিভাবে দিবেন ইত্যাদি।

বাংলাদেশী নাগরিক যারা বিদেশ ভ্রমন করতে চান তাদেরকে ভ্রমন কর বা Travel Tax দিতে হবে ভ্রমন করার পূর্বেই।

ভ্রমণ করের হারঃ
=============
> উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দূর প্রাচ্যের কোন দেশে আকাশ পথে গমনের ক্ষেত্রে ২,৫০০/- টাকা;
>সার্কভুক্ত কোন দেশে আকাশ পথে গমনের ক্ষেত্রে ৮০০/- টাকা;
> উলিস্নখিত দেশসমূহ ব্যতীত অন্য কোন দেশে আকাশ পথে গমনের ক্ষেত্রে ১,৮০০/- টাকা;
> যে কোন দেশে স্থলপথে গমনের ক্ষেত্রে ৫০০/- টাকা;
> যে কোন দেশে জল পথে গমনের ক্ষেত্রে ৮০০/-টাকা;
এবং
> বারো বৎসর পর্যন্ত বয়সের যাত্রীদের ক্ষেত্রে উপরে উলিস্নখিত হারের অর্ধেক হারে।

কারা ভ্রমণ কর অব্যাহতি পাবেনঃ
=========================
(১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণীকে এই আইনের অধীন প্রদেয় ভ্রমণ কর হইতে অব্যহতি প্রদান করিতে পারিবে।
(২) ধারা ৩এ যাহাই থাকুক না কেন, নিম্নশ্রেণীভুক্ত যাত্রীগণ এই আইনের অধীন প্রদেয় ভ্রমণ কর প্রদান হইতে অব্যাহতি পাইবেন, যথা;-
(ক) পাঁচ বৎসর বা তাহার চেয়ে কম বয়সের কোন যাত্রী;
(খ) ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী;
(গ) অন্ধ ব্যক্তি;
(ঘ) ষ্ট্রাচার ব্যবহারকারী পঙ্গু ব্যক্তি;
(ঙ) বিমানে কর্তব্যরত ক্রু এর সদস্য;
(চ) বাংলাদেশে অবসি’ত কূটনীতিক মিশনের কূটনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন সদস্য ও তাহাদের পরিবারের সদস্যগণ;
(ছ) জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও তাঁহাদের পরিবারের সদস্যগণ;
(জ) হজ্ব ও ওমরা পালনের জন্য সৌদি আরব গমনকারী ব্যক্তি;
(ঝ) বাংলাদেশের ভিসাবিহীন ট্রানজিট যাত্রী যাহারা বাহাত্তর ঘণ্টার বেশী সময় বাংলাদেশে অবস্থান করিবেন না; এবং
(ঞ) যে কোন বিমান সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিক যিনি বিনা ভাড়ায় অথবা হ্রাসকৃত ভাড়ায় বিদেশ গমন করিবেন।

আপনার জন্য নির্ধারিত ভ্রমন কর সোনালী ব্যাংকে দিতে পারেন। আবার স্থল পথে ভ্রমনের সময় স্থল বন্দরের ব্যাংকের কাউন্টারে সরাসরি দিতে পারেন। (বেনাপোলে ইমিগ্রেশনের সাথেই কাউন্টার)

http://travelinginbangladeshi.blogspot.com/2016/12/blog-post.html

****ভূটান এ হোটেলে অবশ্যই দামাদামি করে উঠবেন এতে ২০০/৩০০ টাকা প্রতিদিন শুধু হোটেলেই সেভ হবে।****

**কিছু করনীয়ঃ

১. ডলার চেংরাবান্দাতেই ভাংগাবেন কারণ পুরা ভুটানে আমার চোখে কোন মানি এক্সচেঞ্জার পরে নাই। ভুটানে কোন সমস্যা ছাড়াই ইন্ডিয়ান রুপি চলে, সুতরাং ইন্ডিয়ান ৫০০ আর ১০০ করে টাকা নিয়া যান।
২. দার্জিলিং যদি যাওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলেও ডলার চেংরাবান্দাতেই ভাংগাবেন কারণ দার্জিলিং শহরে রেট অনেক কম দেয়।
3. অবশ্যই ১০০ ডলারের নোট নিয়ে যাবেন কারণ ৫০ বা খুচরা নোটে কম রেট দেয়। আর সর্বদাই চেষ্টা করবেন নতুন ১০০ ডলারের নোটটা নিতে। (আমি চেংরাবান্দাতে ৬৬ রুপি করে পেয়েছিলাম) ।
৪. ভূটান ও দার্জিলিং এ হোটেলে অবশ্যই দামাদামি করে উঠবেন এতে ২০০/৩০০ টাকা প্রতিদিন শুধু হোটেলেই সেভ হবে।

**কিছু প্রয়োজনীয় কনটাক নাম্বার ও ঠিকানা (যদি কারো প্রয়োজন পরে)

Hotel Choephal Norkye (Thimphu)
Tel: +975 17628400
এদের ডাবল বেড ১২০০ এবং ত্রিপল বেড ১৫০০ করে। খুবই স্ট্যান্ডার্ড।
Yoesel Hotel 2 (Thimphu)
Tel: +975 77399406
+975 17852311
+975 17606447
এদের ডাবল বেড 700 এবং ত্রিপল বেড 900 করে। moderate service।
Hotel Dragon (Paro)
Tel: +975 8272174
+975 17762628
+975 17320473
এদের ডাবল বেড 1000 এবং ত্রিপল বেড 1300 করে। (This is the best, Bengali foods are available too)
Hotel Diamond (Shiliguri)
Tel: +91 98327 88314
এদের ডাবল বেড 800 করে। moderate service।

http://travelinginbangladeshi.blogspot.com/2016/12/blog-post.html

দশ হাজার টাকায় ঘুরে আসুন ভুটান! (আমার বাংলাদেশ সাইট থেকে পাওয়া )

যারা ভুটান ভ্রমন করতে ইচ্ছুক কিন্তু সঠিক গাইডলাইন এর কারণে যেতে পারছেন না তাদের জন্য এই পোষ্ট আশা করি উপকৃত হবেন। পরিচ্ছন্ন শহর, সুসভ্য নাগরিক, গহীন জঙ্গলে ছাওয়া পাহাড় বা দূষণহীন নদী দেখে যদি আমাদেরও যদি একসময় আমাদের দেশে এই জিনিসগুলো নিশ্চিত করার আকাঙ্খা জাগার কোন সম্ভাবনা থাকে, তাহলে আমি বলবো ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য মারামারি, ধরাধরি, দালালের পেছনে না ছোটাছুটি না করে বরং ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ঘুরে আসুন সুন্দর সুসভ্য দেশ ভুটান, একই খরচে। আর চাইলে আরেকটু বেশি খরচে বিনা ভিসায় আকাশপথে তো যেতে পারেনই।
ভুটান ভ্রমন ভিসা

ট্যুরিস্ট ভিসা ছাড়া আর কোন ভিসার জন্য টোকেন-ফোকেন, ক্যাম্প/ট্যাম্প লাগে না। ট্রানজিট ভিসার জন্যও না। পনের দিনের ভিসা দেবে, যাওয়ার সময় ৩ দিন, এবং আসার সময় ৩ দিন চাইলে ভারতও কিছুটা ঘুরে আসতে পারেন। আমরা যেমন কালিম্পং আর দার্জিলিং ঘুরে এসেছি আসার সময়। দার্জিলিং আগেও গিয়েছি, ভুটান থেকে ফিরে এবার আর ভাল লাগেনি। হোটেলের কাছাকাছি এলেই দালালরা ছেঁকে ধরে! রাস্তাঘাটে ময়লা তো আছেই বাংলাদেশের মত।

খরচ: শ্যামলির শিলিগুড়ি-ঢাকা আসা-যাওয়া টিকেট ৩০০০ টাকা (এসি বাস)
ভিসা প্রসেসিং ফি ৬০০ টাকা
এনডোর্সমেন্ট ফি ১৩০-৫০০ টাকা (ব্যাংক ভেদে)
চ্যাংড়াবান্ধা থেকে জয়গাঁও ট্যাক্সিতে জনপ্রতি ৩০০-৩৫০ রুপি। বাসে গেলে ময়নাগুড়ি থেকে জয়গাঁও, অর্ধেকের কম খরচ।

জয়গাঁও ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে ভুটান গেইট দিয়ে ফুন্টসোলিং হেঁটে ঢুকতে হবে, কোন খরচ নাই। বাংলাদেশে থাকতেই মোবাইল ফোনে গুগুল ম্যাপে জায়গাগুলো দেখে রাখবেন, পরে নেটওয়ার্ক ছাড়াও ক্যাশের জমে থাকা ম্যাপ দিয়ে পথ চিনতে পারবেন। এটা করলে ভেঙে ভেঙেও বাসে চলাচল করা সম্ভব। তাতে সময় বাঁচে।
ফুন্টসোলিংয়ে ৮০০-১২০০ নিউলট্রামে (Ngultrum, গুলট্রাম নয়) হোটেলে ঝকঝকে ডাবল রুম পাবেন, গিজার সহ। অর্থাৎ মাথাপিছু খরচ ৪০০-৫০০ নিউ।
খাওয়া খরচ আপনার ওপর। মোমো/থুকপা খেলে ৪০-৬০ নিউ, ভাত খেলে ১৩০-২৫০ নিউ লাগবে। চা ২০ নিউ। মিনারেল ওয়াটার না কিনলেও পারেন, ওদের নরমাল পানি ভাল। রুপি আর নিউলট্রামের ভ্যালু একই। রুপিও চলে পুরো ভুটানেই।

ফুন্টসোলিং পৌঁছেই পরের দিন দুপুরের বাসের টিকিট কেটে রাখলে থিম্পু যেতে পারেন বাসে। ২৪০ নিউ লাগবে। এই ফাঁকে ফুন্টসোলিং দেখে নিন। সুন্দর আছে। হেঁটেই দেখুন, ভালমত দেখতে পাবেন। ছোট্ট শহর। পাশে সুন্দর নদী, মধ্যদিয়ে ঝর্ণা বয়ে গেছে। পাহাড় তো আছেই। মানুষও দেখার মত। প্রায় সবাই খুব সুন্দর ইংরেজি বলে, ফলে যোগাগোগে সমস্যা হবে না। আর যারাহিন্দি বলতে পারেন, তাদেরও সমস্যা হবে না। ট্যাক্সিতে থিম্পু গেলে মাথাপিছু ৬০০ নিউ লাগবে। বাসের টিকিটের সংকট আছে, বাসও খুব বেশি না।
Sponsored by Revcontent
From The Web
You Won’t Believe What He Did After Winning the Lottery!

থিম্পুতে হোটেল খরচ/খাওয়া খরচ ফুন্টসোলিংয়ের মতই। অর্থাৎ দিনে ১ হাজার টাকায়ই হয়ে যাবে। ট্যাক্সি ছাড়াও ঘোরা সম্ভব, মজাই লাগে। দু একটা জায়গায় ট্যাক্সি খরচ যোগ করতে হবে। শেয়ার করলে খরচ কমই।
থিম্পুএক রাত থেকে পরদিন সকালে রওনা দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি চলে আসতে পারেন সারা দিনে। রাতটা কাটিয়ে পরের দিন বর্ডার ক্রস করে দেশে ঢুকতে পারেন। আমি হলে শিলিগুড়ি না এসে ফুন্টসোলিংয়ে, অর্থাৎ ভুটানেই রাতটা কাটিয়ে পরদিন বিকালে চ্যাংড়াবান্ধা ক্রস করবো।

এ পর্যন্ত যাওয়া আসা ও ভুটান / ভারতে ৩ রাতের খরচ মিলে বোধহয় ১০ হাজার টাকার মতো হলো, ক্যালকুলেট করতে ইচ্ছা হচ্ছে না । বাসে করে পারোও যেতে পারবেন, প্রতি দিনের জন্য এক-দেড় হাজার টাকা যোগ করুন ।

এই লিংকে (http://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/index.html) গিয়ে নিজে নিজেই ভারতের ভিসার ফরম পূরণ করুন, তারপর প্রিন্ট নিয়ে গুলশান ভিসা সেন্টারে (IVAC) চলে যান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ (ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য যা লাগে)। আর ভুটান বর্ডারে অন অ্যারাইভেল ভিসা পাবেন ৭ দিনের। আমরা থিম্পুতে গিয়ে আরও চারদিন এক্সটেন্ড করে নিয়েছিলাম, ফলে মোট ১১ দিন ঘুরেছি ভুটানে। ফুন্টসোলিং, পারো, থিম্পু, পুনাখা/ওয়াংদি ও বুমথাং। ফেরার পথে ভারতে কালিম্পং ও দার্জিলিং। আমরা দুইজন গিয়েছিলাম, কোন এজেন্ট ফেজেন্ট ছাড়াই, ১৩ দিনের ট্রিপে খরচ হয়েছে সর্বসাকুল্যে মাত্র ৫৫০ ডলার। অর্থাং জন প্রতি প্রায় ২৭৫ ডলার।

চারজন গেলে ভাল হবে, রুম ও ট্যাক্সি শেয়ার করতে পারবেন আরামে। তবে যত বেশ ভ্রমণসঙ্গী, তত ফ্যাকরা। কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠবে না, কেউ নিজের পানির বোতল নিজে বহন করবে না, কেউ এখানে যেতে চাইবে, কেউ ওখানে। আমার হিসাবে দুজনই বেস্ট। কোনভাবেই ৩ জন বা ৫ জন নয়।

বিদ্র: ভুটান পরিচ্ছন্ন দেশ, সেটাকে পরিচ্ছন্নই রাখবেন দয়া করে। রাস্তা পার হবেন জেব্রা ক্রসিংয়ে, নিয়ম মেনে। সবার সাথে বিনীত আচরণ করবেন, যেন বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকে। মনে রাখবেন, ওরা প্রতিবেশি অনেক দেশের (!) মানুষের চাইতে বাংলাদেশিদের শ্রদ্ধা করে। শ্রদ্ধার দাম দেবেন অনুগ্রহ করে। আমরা যে রুমে থেকেছি, সেটার বালিশ কম্বল পর্যন্ত গুছিয়ে রেখে এসেছি, যেন পরে দেখে খুশি হয় ।

ঘড়ি দেখে চলুন। ওদের সকাল ৮ টার বাস ৮:০০ বাজেই ছাড়ে। আধঘণ্টা আগে রিপোর্ট করার নিয়ম। ওয়াংদিতে আমাদের দেরি দেখে ফোন দিয়েছিল। আমরা পৌঁছাবার পর বাস ছাড়লো, তাও নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট আগেই, ৭:৫৬ মিনিটে, কারণ যাত্রী সবাই চলে এসেছে। দেরী করলে বাস মিস করবেন, তখন আর ১০ হাজার টাকায় হবে না। আমার দোষ দিয়ে কিন্তু টাকা ফেরত পাবেন না।

Tour de Bhutan – Bhutantastic! (সূত্র : Ovy Islam)
Phuntsholing

ঘুরে আসলাম ট্রেজার হাউজ অফ আর্ট এবং দ্যা লাস্ট হিমালায়ান কিংডম ভুটান!

বিদঘুটে হর্নের শব্দহীন একটা দেশ ভুটান! শান্ত, সুনিবিড় আর কোলাহলমুক্ত! পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর, ভদ্র এবং সুসভ্য নাগরিক, স্রোতোবহা এবং স্বচ্ছ নদী আর বিশাল বিশাল সবুজ পাহাড় দেখতে চান? সাথে বোনাস হিসেবে থাকছে অসাধারণ মনুমেন্ট, স্ট্যাচু, বৈদেশিক কালচার, স্নো ধরার সুযোগ ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক কিছু!

পাহাড়ের মধ্য দিয়ে সর্পিল রাস্তা। তীব্র গতিতে বাক নিচ্ছে ড্রাইভার। হাত ফসকালেই হাজার মিটার নিচে ছিটকে পড়বে। কতো গাড়ি পাশ কাটাচ্ছে। কিন্তু কেউ হর্ন দেয় না। এতো অবাক লাগলো দেখে আমার! আমাদের দেশে হর্নের শব্দে টেকা দায়!মানুষ জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পারাপার হতে দেখলে গাড়িগুলো অটোমেটিক থেকে যাচ্ছে, কি আশ্চর্য! কতো সভ্য ওরা! আবার মানুষ থেমে যাচ্ছে দেখে ড্রাইভাররা সংকেত দিয়ে বলছে, ” তুমি যাও!”
Thimphu
আমরা গিয়েছি ৪ জন অফিসের কলিগ। ৫ দিন ছিলাম। প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকার মতো লেগেছে। ঘুরেছি থিম্পু, পারো এবং পুনাখা!

যেতে লাগবে কি?

– ভারতের ট্রানজিট ভিসা! ভিসা ফর্ম ফিল আপ করে এপ্লাই করেন, চৌদ্দ – পনের দিনের ভিসা পাবেন। যাওয়ার সময় ৩ দিন, এবং আসার সময় ৩ দিন চাইলে ভারত ঘুরতে পারবেন। বাসের টিকেটটা টাইম মিলিয়ে কাটবেন যাতে ভিসা পাওয়ার পরে ওই টিকেটে যেতে পারেন।আপনি চাইলে আকাশপথেও যেতে পারেন। আমরা যখন যাই তখন টিকেট এভেইলএবল ছিলো না, একটু আগেই কাটবেন টিকেট যদি এয়ারে যেতে চান! ওখানে গেলে অন এরাইভাল ভিসা দিয়ে দিবে।আমি ২১ তারিখ রাতে শ্যামলী পরিবহনে রওয়ানা দেই। বহুকষ্টে অফিস থেকে দুইদিন ছুটি নেই, তারসাথে ৩ দিন টানা ছুটি মিলিয়ে ৫ দিনের প্ল্যান নিয়ে যাত্রা শুরু করি।

কল্যাণপুর – বুড়িমারি ; যাত্রা বাসে ; সময় লাগবে প্রায় ১০/১১ ঘন্টা, টিকেটের দাম নিবে ১৩০০-১৫০০ টাকা।

ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়া লাগবে ৫৫০ টাকা। এটা বাসেই দিয়ে দিবেন, তাহলে ওরাই প্রসেস করে দিবে আপনার পাসপোর্ট।
Buddha Point, Thimphu
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন অফিসে যাবেন তারপর। ওখানে গিয়ে ছবি তোলা লাগবে। আপনি চাকুরীজীবী হলে অবশ্যই NOC লেটার নিয়ে যাবেন। তারপর বাংলাদেশি কাস্টমস ক্রস করে ইন্ডিয়ান কাস্টমস ক্রস করবেন। তারপর ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশনে প্রসেসিং করবেন। এখানে ১০০ রুপি দালালকে দিলে কাজ ত্বরান্বিত হবে। পাসপোর্ট এর কাজ শেষ হলে টাকা এবং ডলার ভাংগায় ইন্ডিয়ান রুপি করে নিবেন। ভুটানে সবজায়গায় রুপি চলে। এখন আপনি ওয়েস্ট বেংগলের চ্যাংরাবান্ধায় আছেন।

চ্যাংরাবান্ধা – জয়গাও; যাত্রা মিনি মাইক্রোতে ; সময় লাগবে ৩/৪ ঘন্টার মতো ; ভাড়া লাগবে ১৪০০-১৭০০ রুপি, ৬ জন বসতে পারবেন অনায়াসে।

জয়গাও হলো ভারত-ভুটান বর্ডার। ভারতে হলো জয়গাও আর ভুটানে হলো ফুন্টসোলিং। ভারত-ভুটান ওপেন বর্ডার। কোন হ্যাসেল নাই। ভারত ইমিগ্রশন অফিসে গেলেই আপনার পাসপোর্ট এ সীল মেরে দিবে। তারপর হেটে ভুটানে ঢুকে পড়বেন এবং ভুটান ইমিগ্রেশন থেকে পারমিট নিয়ে নিবেন। ভারতের এলাকাটা নোংরা, কোলাহলপূর্ণ। ফুণ্টসোলিং ঢুকলেই আপনার মনে হবে অন্য এক দুনিয়ায় চলে আসছেন। সবকিছু নিয়ম মেনে চলছে। শান্ত, কোলাহলপূর্ণ এবং কোথাও কোন ধূলোময়লা নেই। মীনা কার্টুনের ভাষায় বলতে গেলে, ” এ আমি কই আইলাম! ”
Memorial Chorten, Thimphu

ফুন্টসোলিং থেকে থিম্পু যেতে ৫/৬ ঘন্টা লাগে, বাহন ট্যাক্সি। ভাড়া লাগবে ২৫০০-৩০০০ রুপি। ৪ জন বসতে পারবেন। এখান থেকে বাসও যায়। তবে বাস সবসময় ছাড়ে না এবং পরিমাণে কম। আমরা ট্যাক্সি দিয়ে গিয়েছিলাম থিম্পু।

ফুন্টসোলিং থেকে থিম্পুর রাস্তায় পাবেন আসল ভুটানের স্বাদ! নৈসর্গিক দৃশ্য! এই জার্নির কথা কোনদিনও ভুলবো না। আহা! পাহাড়ের প্রতিটা বাক এখনো ভুলতে পারি না। প্রতিটা বাকে বাকে সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য!

শীতের ব্যাপারে কিছু কথা। ফুন্টসোলিং থেকে রাস্তা ধরে যতো থিম্পুর দিকে যাবেন তাপমাত্রা ততই কমবে। অবশ্যই অবশ্যই শীতের পোষাক নিবেন। আমরা রাত ১১:৩০ এ থিম্পু পৌঁছাই। গাড়ি থেকে বের হয়েই দাত কপাটি লেগে যাবার জোগাড়, এত্তো ঠান্ডা। শূন্য ডিগ্রী, হিমাংকের নিচে চলে যায় যায় অবস্থা। থার্মাল ইনার, আপার কিনে নিয়েছিলাম বংগবাজার থেকে, ওটা অনেক কাজে দিয়েছে। অবশ্যই কিনে নিবেন!
Dochula Pass
আমরা থিম্পুতে ছিলাম হোটেল টাক্টসাং এ! তারপর পারোতে গিয়ে ছিলাম হোটেল পারোতে। ফুন্টসোলিং এ ছিলাম হোটেল হ্যাভেন ইনে। ভালোই ছিলো হোটেলগুলো। ৪ জনের স্ট্যান্ডার্ড রুমে ভাড়া পড়বে ১২০০-১৫০০ রুপি। যতো আগে বুক দিবেন তত কমদামে রুম পাবেন। রুমে টিভি, এসি, হিটার, গিজার পাবে এই রেটের মধ্যই। এর মধ্য কিছু ফ্যাসিলিটি কম নিলে আরো কম দামে রুম পাবেন। অনলাইম থেকে নাম্বার নিয়ে ডিরেক্ট কল দিয়ে হোটেল বুক করে ফেলবেন।
Punakha Dzong, Punakha
খাবার নিয়ে কিছু কথা বলি। সত্যি বলতে গিয়ে আমার খেতে কষ্ট হয়েছে। আমি ভেজিটেবল একেবারেই পছন্দ করি না। ওখানে ভেজিটেবল মোটামুটি ভালো আছে। ইন্ডিয়ান নন ভেজ রেস্টুরেন্টগুলোতে গেলে রাইস, চিকেন, মাটন সবই পাবেন। ইন্ডিয়ান ট্রাডিশনাল আইটেমগুলোও ওখানে পাবেন। ঘুরতে গেলে খাবার নিয়ে এতো চিন্তা না করাই উত্তম। প্রতিবেলার খাওয়াদাওয়া ১০০-১৫০ রুপির মধ্য করতে পারবেন। ওদের স্ট্রিটফুডগুলোও ভালো, ট্রাই করবেন
Paro Dzong, Paro
ঘুরতে যাবার জন্য ট্যাক্সি বেস্ট। প্রতিদিন ভাড়া এরাউন্ড ২০০০-৩০০০ রুপি। দরদাম করে নিবেন।

খুব প্রাণোচ্ছল আর সাহায্যকারী মানুষ ভুটানিজরা! আপনি যা জানতে চাইবেন তা জানানোর পরেও ওরা আপনাকে ছাড়বে না, আপনার যা জানা দরকার সব বলে দিবে। এতোই হেল্পফুল ভুটানিজরা। খুব বেশি করে মনে থাকবে চেলালা পাসের স্নো ধরার এবং দেখার স্মৃতি! আরো মনে থাকবে সাসপেনশন ব্রিজ, বুদ্ধের বিশাল স্ট্যাচু, মোচু নদীতে র‍্যাফটিং এবং ভুটানিজদের আতিথেয়তা!
Paro Airport

ভুটানের স্মৃতিময় কিছু ছবি এবং ভিডিও দিলাম। দেখতে পারেন!

একজন গাইড প্লাস গাড়িচালকের নাম ও কন্ট্যাক্ট নাম্বার দিয়ে দিলাম। কেউ যদি ভুটান যান ওর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ও খুব হেল্পফুল! হোটেল খোজা, গাড়ি খোজা হতে শুরু করে আপনার যে কোন আবদারে ও হেল্প করবে।

Sudan Sapkota – Welcome to this group, Sudan! For Bangladeshi travelers, This man is a very good guide. He can drive too. This guy can help you regarding any matter. He helped us a lot during our journey!
Suspension Bridge, Punakha
একটা শেষ রিকোয়েস্ট, বিদেশ বিভূঁইয়ে গিয়ে দেশের রেপুটেশন ডুবাইয়েন না। এমনিতেই অর্ধেক ডুবে আছে। প্লিজ, নিয়মকানুন মেনে চলবেন ওখানে গিয়ে!

ওহ আচ্ছা, ছবি সব মোবাইলে তোলা।

আর কোন প্রশ্ন থাকলে করবেন… ধন্যবাদ!

হ্যাপী ট্রাভেলিং!

#নেপাল ভ্রমণ করতে কার মন চাচ্ছে যদি ট্রাঞ্জিট ভিসা নিয়ে বাই #রোডে ভারতের ভিতর দিয়ে যেতে পারেন। ট্রাঞ্জিট ভিসা ও নেপাল ভ্রমণ।

পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত অবস্থিত নেপালে এমনকি কাঞ্চনজঙ্ঘাও অবস্থিত নেপালে। নেপাল মূলত প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দর যা লিখে তেমন বোঝানো সম্ভব নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর কয়েক লাখ ট্যুরিস্ট নেপাল ঘুরতে যায় তার মধ্যে বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর পরিমাণে ঘুরতে যায় যা বৃহৎ একটা অংশ। তবে নেপালের আয়ের প্রধান অংশ ট্যুরিজম খাত থেকে আসে।

অনেকে ভারতের ভিতর দিয়ে নেপালে যেতে চান কিন্তু কিভাবে যাবেন আর কিভাবে ট্রাঞ্জিট ভিসা করবেন সেটা হয়তো অনেকের কাছে অজানা এবং কঠিন মনে হওয়াতে সে ইচ্ছা আর থাকে না। কিন্তু কঠিনের কিছু নেই। আপনি সহজে যেতে পারবেন যদি কিছু নিয়ম মেনে আবেদন করেন নতুবা সম্ভব নয়।

সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে এয়ারে করে #অন এরাইভাল ভিসা নিয়ে সহজে নেপালে ভ্রমণ করতে পারবেন যা সহজে যে কেউ পারে যেহেতু ভিসার জন্য নেপালের ভিসা এম্বাসিতে দৌড়াদৌড়ি করা লাগেনা।

যাইহোক আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে সড়কপথে নেপাল ভ্রমণ করা। তো চলুন শুরু করা যাক ——

আগে ভারতের ভিতর দিয়ে #কাকরভিটা বর্ডার পার হয়ে সহজে নেপালে যাওয়া আসা করা যেত অর্থাৎ সহজে ট্রাঞ্জিট ভিসা দেওয়া হতো এবং মাঝখানে এই সিস্টেম কয়েকমাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল অর্থাৎ ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বন্ধ ছিল। এখন আবার চালু হয়েছে তবে একটু কঠিন যদিওবা নিয়ম জানা থাকলে তাদের জন্য খুবই সহজ ব্যাপার। অনেকে মনে করে যে, ভারত সরকার নেপালের ট্রাঞ্জিট ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু এটা মোটেও সত্য নয়। এখন চালু আছে আর কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অতিক্রম করে গেলেই যেতে পারবেন, কোন সমস্যা নেই।

#প্রথমে নেপালে যদি কেউ #সড়কপথে ভ্রমণ করতে চাই সেক্ষেত্রে তাকে প্রথমে তার পাসপোর্ট এ ভারতের ভিসা থাকতে হবে অর্থাৎ আগে ভারতের গিয়েছেন সেটার প্রমাণ থাকতে হবে তারপর #নেপালের ভিসা থাকতে হবে বা নিতে হবে। তাহলে ধরে নিলাম আপনি ভারতের ভিসা নিয়ে ভারতে আগে একবার হলেও ঘুরে এসেছেন। তাহলে সহজে সড়কপথে নেপাল বা ভুটানের ভিসা পাওয়া একদম সহজ।

এরপর তাকে #নেপালের ভিসা এম্বাসিতে দরকারি কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে। নেপালের ভিসা এম্বাসি ৩০ দিন বা ৬০ দিনের ভিসা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রথমবার নেপালের ভিসা এম্বাসি কোন টাকা নেয়না। কিন্তু ২য় বার #নেপালে ট্রাঞ্জিট ভিসা নিয়ে ঘুরতে গেলে ২২০০ টাকা ভিসা ফি বাবদ দিতে হয়।

ঢাকার গুলশানাস্থ আমেরিকা ভিসা এম্বাসির পাশে ভ্যাটিকান সিটি ভিসা এমম্বাসির একদম পাশেই নেপালের ভিসা এম্বাসি অবস্থিত।

যাইহোক, যে সব পেপারস রেডি করে নিবেন তা হলো আপনার ন্যাশনাল আইডি/জন্ম নিবন্ধন এর কপি, ২ কপি ছবি, নাগরিক সনদপত্রের কপি, ঢাকা টু বুড়িমারি বাস রিটার্ন টিকিট কপি, নেপালের হোটেল বুকিং কনফার্মেশন কপি, পাসপোর্ট মেইন পেজ কপি এবং মেইন পাসপোর্ট।

#উল্লেখ্য এখানে ঢাকা টু বুড়িমারি রিটার্ন টিকিট কাটা বাধ্যতামূলক এবং এই কপি দিতেই হবে নতুবা নেপালের ভিসা পাবেন না। সেই সাথে নেপালের হোটেল বুকিং কনফার্মেশন কপিও দিতে হবে।

গুগলে সার্চ দিয়ে নেপালের যে কোন একটা হোটেল বুকিং দিতে পারেন অথবা Booking.com থেকেও হোটেল বুকিং দিলে আপনার ইমেইলে বুকিং কনফার্মেশন কপি পেয়ে যাবেন। অগ্রীম টাকা না দিলেও হবে তবে হোটেলে গিয়ে দিতে হবে বা দিবেন যদি ওই হোটেলে উঠেন।

তো, নেপালের ভিসা এম্বাসিতে পাসপোর্ট এর সাথে উল্লেখিত সমস্ত পেপারস সঠিক ভাবে নিয়ে যাবেন আর সেই সাথে নেপালের ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম ফিলাপ করে প্রিন্ট করে নিবেন যাবতীয় তথ্য দিয়ে অর্থাৎ ফর্ম এ যা যা তথ্য চাওয়া হয়েছে সেই সব তথ্য দিয়ে পূরণ করবেন। এটি নেপালের ভিসা এম্বাসির ওয়েবসাইট আর এখানে প্রবেশ করে ফর্ম ডাউনলোড করে ফিলাপ করবেন http://www.nepembassy-dhaka.org/visa.html

ভিসা ফর্ম ফিলাপ করে প্রিন্ট করে উপরে উল্লেখিত সমস্ত পেপারস মেইন পাসপোর্ট এর সাথে জমা দিবেন নেপালের ভিসা এম্বাসিতে। আপনার সব কিছু ঠিক থাকলে ১/২ দিনের ভিসা পেয়ে যাবেন। প্রথম অবস্থায় সম্ভবত ৩০ দিনের ভিসা পাবেন নেপালে যাওয়ার জন্য। আর এই এপ্লাই বা ভিসা এম্বাসিতে পেপারস জমা দিবেন যখন মনোস্থির করেছেন যে, নেপালে ঘুরতে যাবেন সড়কপথে।

যাইহোক, নেপালের ৩০ দিনের ভিসা তো পেয়ে গেলেন এবার ভারতের ভিসা এম্বাসির ওয়েবসাইটে গিয়ে https://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa ভারতের ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম ফিলাপ করুণ। পোর্ট অফ এন্ট্রি আর পোর্ট অফ এক্সিট দুটোই হবে Chengrabanda/Raniganj Port।

ট্রানজিট ভিসার এপ্লিকেশন পূরণ করার সময় পিতামাতার “Previous Nationality” ঘরটা অবশ্যই পূরণ করতে হবে, যদিও এটা তারকা চিহ্নিত বক্স না। ভারত সরকার নেপাল বা ভুটানের জন্য ১৫ দিনের ট্রানজিট ভিসা দেয়, সুতরাং ১৫ দিন অথবা ৩০ দিনের জন্য ভিসার আবেদন করুন।

“Purpose of visit” অপশনে “Tourism” সিলেক্ট করুন। “No. of Entry” তে Double, “After India” অপশনে Nepal, “Before India” অপশনে Nepal, এবং দুবারই Have Visa/Permit এ টিক চিহ্ন দিন। ভারতের শিলিগুড়ির কোনো হোটেলের ঠিকানা নেটে সার্চ দিয়ে “Address of Place of Stay” তে বসিয়ে দিন। “Expected Date of Journey” তে যেদিন বাংলাদেশ থেকে রওনা দিবেন তার পরের দিনের তারিখ বসিয়ে দিবেন। যেমন বাংলাদেশ থেকে যদি ২১ তারিখ রাতের বাস হয় বুড়িমারি পর্যন্ত তবে জার্নি ডেইট হবে ২২ তারিখ কারণ আপনি কিন্তু ভারতে প্রবেশ করে তবেই আপনার ভ্রমণ শুরু হবে তাই ২২ তারিখ ই দিতে হবে অর্থাৎ এটা বোঝানোর জন্য দেওয়া হলো।

আপনার সকল তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে ছবি upload করে প্রিন্ট আউট করে নিন। ভারতীয় ট্রানজিট ভিসায় কোনো এপয়েন্টমেন্ট নেয়া লাগে না। তাই ফর্ম ফিলাপ করে প্রিন্ট করে নিলেই হবে।

তবে এক্ষেত্রে খুব জরুরী দুটো কাগজ লাগে সেটা হলো #নেপালের হোটেল বুকিংয়ের কপি আর বুড়িমারি পর্যন্ত বাসের রিটার্ন টিকেটের কপি। নেপালের হোটেল বুকিং করা যাবে Booking.com থেকে। এই ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ আকারে বুকিং এর কপি ডাউনলোড করা যাবে।

এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করা হয়ে গেলে প্রিন্ট আউট করে তার সাথে হোটেল বুকিংয়ের কপি, মেইন পাসপোর্ট, পাসপোর্টরে ফটোকপি, বাসের ২টি (যাওয়া+আসা) টিকেটের ফটোকপি, আইডি কার্ডের ফটোকপি (ছাত্রদের জন্য), জন্মনিবন্ধন/ জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি, ব্যাংক স্টেইটমেন্ট (১৫০ ডলার সমমূল্যের ব্যালেন্স থাকা জরুরী) আর ২”x২” সাইজের এক কপি সদ্য তোলা ছবি সংযুক্ত করে চলে যান গুলশান-১ এর ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার (IVAC) এ।

একমাত্র গুলশান-১ এর আইভ্যাকেই ট্রানজিট ভিসার আবেদনপত্র জমা নেয় সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। আইভ্যাকে কখনোই ব্যাগ জাতীয় কিছু নিয়ে যাবেন না, আর গুলশান-১ যাওয়ার আগে অবশ্যই Ucash এ ৬০০ টাকা ভিসা ফি দিয়ে যাবেন অথবা অনলাইনে ৬০০ সাথে সার্ভিস ফি ১৮ টাকা অর্থাৎ ৬১৮ টাকা জমা দিতে পারবেন।

গুলশান-১ এর আইভ্যাকে গিয়েও এজেন্টের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা পাবেন, সেক্ষেত্রে লাগবে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা অর্থাৎ তারা কিছু কমিশন নিবে।

Ucash এ টাকা জমা দেয়া হয়ে গেলে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া হয়ে গেলে সরাসরি আইভ্যাকে ঢুকে পড়ুন। ট্রানজিট ভিসার আবেদনকারীদের জন্য আলাদা কোনো লাইন ধরতে হয় না। আইভ্যাকে ঢুকে সরাসরি বেইজমেন্টে চলে যান, সেখানেই জমা নিবে আপনার আবেদন পত্র।

আবেদনপত্র জমা নিয়ে পাসপোর্ট উত্তোলনের সময়সূচী দিয়ে একটি ডেলিভারি স্লিপ দিবে। ওটা নিয়ে চলে আসুন। ডেলিভারি স্লিপের তারিখ অনুযায়ী ট্রানজিট ভিসার পাসপোর্ট খুবই কম দিতে দেখা গেছে। সাধারণত যাত্রার একদিন আগে বা যাত্রার দিন গুলশান-১ থেকে পাসপোর্ট পাওয়া যায়। তাই একমাত্র মোবাইলে মেসেজ আসলে তবেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে যাওয়া উচিত। আর যদি যাত্রার আগের দিনও মেসেজ না আসে তবে সরাসরি আইভ্যাকে গিয়ে দুইতলার “২০৫” নাম্বার রুমে তাদের ডিরেক্টরের সাথে কথা বলুন। একটু দেরী হলেও সেদিনই পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।

নেপালের জন্য ভারতীয় ট্রানজিট পাওয়ার মূল শর্ত হচ্ছে আগে থেকে নেপালের ভিসা থাকতে হবে। এটা থাকলে আর কাগজপত্রে কোনো ভুল না থাকলে কোনো চিন্তা ছাড়াই পেয়ে যাবেন সড়কপথে ভারত হয়ে নেপাল যাওয়ার ট্রানজিট ভিসা।

এরপর যথারীতি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন যেহেতু ট্রাঞ্জিট ভিসাতে মেয়াদ ১৫ দিন অথবা ৩০ দিন দিয়ে থাকে। আপনি চেংড়াবান্দা বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করলেন তারপর আপনি নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেন স্টেশনে চলে আসুন।

#নিউজলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে কিভাবে নেপালের বর্ডার এ যাবেন?

উত্তর: NJP station এর একটু সামনেই কিছু ব্লু কালারের বাস দেখতে পাবেন যা শিলিগুড়ি পর্যন্ত যেয়ে থাকে যা সময় অনেক বেশি লাগে আর প্রচুর থামে বিভিন্ন যায়গাতে। কিন্তু আপনি ওই Bus এ না গিয়ে কার Parking এর একটু সামনে গিয়ে সরাসরি বাস পাবেন যা PanitankI পর্যন্ত গিয়ে থাকে। NJP স্টেশন থেকে পানিট্যাংকি পর্যন্ত মাত্র ৩৫ কি.মি. পথ এবং যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা। আর ভাড়া নিবে মাত্র ২০/২৫ রুপি প্রতিজন।

#আচ্ছা, আমি পানিট্যাংক কেন যাবো জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে?

উত্তর: মূলত নেপালে সড়কপথ দিয়ে যেতে চাইলে ভারতের ভিতরে যে বর্ডার আছে সেই বর্ডার এর নাম হচ্ছে পানি Panitanki border (পানিট্যাংকি বর্ডার)। মূলত এই বর্ডার টি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় যেমন আমাদের দেশে বেনাপোল বর্ডার খুব জনপ্রিয়।

#তাহলে, নেপালে প্রবেশ করার পর তাদের বর্ডার এর নাম কি?

উত্তর: Kakarbhita border (কাকরভিটা বর্ডার) যা নেপালের বর্ডার এর নাম যেমন বেনাপোল দিয়ে প্রবেশ করার পর ওই পারের নাম হচ্ছে পেট্রোপোল বর্ডার। যাইহোক পানিট্যাংকি বর্ডার পার হয়ে ওই পারে গেলেই কাকরভিটা বর্ডার শুরু যা নেপাল এর রাস্তা শুরু।

#অহ আচ্ছা, বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে বলবেন কি?

উত্তর: সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খোলা থাকে অর্থাৎ আপনাকে এই সময়ের মধ্যে বর্ডার পার হয়ে ওই পারে যেতে হবে নতুবা এক রাত শিলিগুড়ি হোটেলে থাকতে হবে পরের দিন যাওয়ার জন্য।

#আমি পানিট্যাংকি বর্ডার পৌঁছানোর পর কিভাবে কি করবো?

উত্তর: আপনি বাস থেকে বা সরাসরি ট্যাক্সি নিয়েও বর্ডার এ যেতে পারেন। যাইহোক বাস থেকে নেমে একটু হেটে গিয়ে ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন অফিস বিল্ডিং আছে যা দোতলা। ওখানে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট দেখাবেন অফিসারকে তারপর অফিসার আপনার পাসপোর্ট এ স্টাম্প বা সিল মেরে দিবে এন্ট্রি করার জন্য। ব্যাস, আপনার কাজ শেষ এবং আপনি এখন নেপালের ভিতর প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুত।

#আচ্ছা, ওই পারে কিভাবে যাবো? আমিতো নতুন একটু ক্লিয়ার করে বলুন প্লিজ।

উত্তর: আপনার ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ হওয়ার পর আপনি গেট দিয়ে নেপালের বর্ডার এ প্রবেশ করবেন তারপর চাইলে কিছু দূর হেটে যেতে পারেন অথবা প্রচুর রিকসা পাবেন। আপনি চাইলে রিকসা ভাড়া করে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন। কারণ একটা ব্রীজ পার হতে হবে। ভারত ও নেপালের মধ্যে কোন ল্যান্ড নেই শুধু ব্রীজ ই বর্ডার কে দুভাগ করা হয়েছে অর্থাৎ ব্রীজ পার হয়ে গেলেই #কাকরভিটা বর্ডার এ পা দিবেন যা নেপালের বর্ডার।

#ব্রীজতো পার হলাম কিন্তু কাঠমান্ডু কিভাবে যাবো?

উত্তর: যাক, কাকরভিটা বর্ডার পার তো হয়েছেন তাহলে আর টেনশন করবেন না। ব্রীজ পার হওয়ার পর একটু সামনে এসে দেখবেন বাস কাউন্টার। অর্থাৎ আপনি বর্ডার পার হয়ে ওই পারে যেতে সকাল ১০ টা বা ১১ টা বেজে গেল অথবা দুপুরের পর পার হয়ে পৌঁছালেন তাতে কোন সমস্যা নেই। বাস কাউন্টার থেকে কাঠমান্ডুর এসি বাসের টিকিট কেটে উঠবেন।

#বাসে যেতে কত সময় আর ভাড়া কেমন?

উত্তর: বর্ডার পার হয়ে একটু হেটে সামনে গেলেই নেপালের বাস কাউন্টার পাবেন। সেখানে থেকে এসি ডিলাক্স বাস #Bihani AC Bus আছে যা সকাল ৬ টায়, ৭ টায়, আর বিকেল ৩ টায়, ৫ টায় ছাড়ে। তাই সকালে বা বিকেলে যে কোন টাইমে বাস পাবেন। যাইহোক কাউন্টার থেকে এসি বাসের টিকিট কেটে নিবেন। প্রতিজন ভাড়া ১৬৩০ রুপি নিবে আর সময় লাগবে ১৬/১৭ ঘণ্টা অর্থাৎ লং জার্নি হবে এটা নিশ্চিত থাকুন। তবে মাঝে ২/৩ যায়গা বিরতী দিবে যাতে ক্লান্তি দূর হয় আর রিফ্রেশ হয়ে নিতে পারেন।

#আচ্ছা, আমার কি ছবি আর পাসপোর্ট কপি নিতে হবে?

উত্তর: জি, ৪/৫ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আর মেইন পাসপোর্ট এর মেইন পেজের ৪/৫ কপি করে সাথে নিবেন কারণ বর্ডার এ দেওয়া লাগবে আর হোটেলে উঠার সময় দিতে হবে। তাই আগে থেকে এসব সাথে করে নিয়ে গেলে আপনার জন্য সুবিধা হবে নতুবা ফটোকপির জন্য এদিক ওদিক করে সময় নষ্ট হবে।

#আমি কি কাকরভিটা বর্ডার থেকে নন এসি বাস পাবো কাঠমান্ডু যাওয়ার জন্য?

উত্তর: জি পাবেন কিন্তু প্রচুর সময় লাগবে আর নয়েজ হবে আর অতিস্ট হয়ে যাবেন তাই #Bihani AC bus ই আপনার জন্য বেস্ট হবে। এই বাসের সার্ভিস খুব ভালো।

#বর্ডার পার হওয়ার পর খাবার হোটেল কি পাবো?
উত্তর: জি, পাবেন।
সংগৃহীত: http://travelersofbangladeshi.blogspot.com/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *