বার্তা প্রতিনিধি: নিউজিল্যান্ডে তখন স্থানীয় সময় ১টা ৪০ মিনিট। অনুশীলন শেষে মিটিং শেষ করে ওই সময় শহরের হ্যাগলি পার্কমুখী সড়ক দীন এভিনিউতে আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা।
মসজিদে প্রবেশ করার ঠিক আগমুহূর্তে এক অজ্ঞাত নারী বাংলাদেশি ক্রিকেটারদেরকে সাবধান করেন যে, ভেতরে একজন পিস্তল হাতে ঢুকেছেন এবং গোলাগুলি করেছেন। অজ্ঞাত নারীর ওই সাবধান বাণী শুনেই কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা টিম বাসে ওঠে পড়েন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা এবং সেই বাসের মেঝেতে শুয়ে পড়েন।
এই মসজিদেই জুমার নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। ছবি: সংগৃহীত
এ সময় গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান তারা। শুধু তাই নয়, বাস থেকেই তারা দেখতে পান, মসজিদের সামনে অনেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। অনেকে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে বেরিয়ে আসছেন মসজিদ থেকে। যা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ক্রিকেটাররা। এরপর ভয়ার্ত ক্রিকেটাররা দ্রুতই হ্যাগলি পার্কের রাস্তা ধরে স্টেডিয়ামে ফেরেন। এই মুহূর্তে তারা নিরাপদেই রয়েছেন।
আপাতত ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। তবে মাত্র পাঁচ মিনিট আগে যদি মসজিদে পৌঁছাতেন, তবে ঘটনা ভিন্নই হতো।
বাংলাদেশ দলের মসজিদে ঢোকার কথা ছিল দুপুর দেড়টায়। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সংবাদ সম্মেলন শেষ করে মসজিদে যেতে যেতে ১টা ৪০ বেজে যায়। বাংলাদেশ দলের বাস আর পাঁচ মিনিট আগেই মসজিদে পৌঁছে গেলে ক্রিকেটাররা সন্ত্রাসী হামলার সময় মসজিদের ভেতরে থাকতেন। স্টেডিয়ামে ফেরার পথে হাঁটতে হাঁটতে ক্রিকেটারদের বলতে শোনা যায়, সংবাদ সম্মেলন একটু দেরিতে শেষ না হলেই সর্বনাশই হয়ে যেত।
পুরো ক্রাইস্টচার্চ শহরই এখন অবরুদ্ধ। ছবি: সংগৃহীত
হ্যাগলি ওভালের ড্রেসিংরুমে ঘণ্টা দুয়েক অবরুদ্ধ থাকার পর বাংলাদেশ দলকে বিশেষ এসকর্টে করে নভোটেল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো ক্রাইস্টচার্চ শহরই এখন অবরুদ্ধ। বাংলাদেশ দল হ্যাগলি ওভালে ফিরে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই শহরের একাধিক জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার খবর আসতে থাকে। বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যাও। কিউই সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২০-৩০ জন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। ১৬ মার্চ, শনিবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে কিউইদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে মাঠে নামার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে পরিস্থিতি বলছে, সিরিজের শেষ টেস্টটি বাতিল হয়ে যাওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। বাংলদেশের বিসিবির সভাপতি বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
সূত্র: প্রিয়.কম