বার্তা প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের রেজাকার বলায় চলমান আন্দোলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সম্মানজনক সমাধান চাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় অবস্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টির অচলাবস্থা দীর্ঘতর হচ্ছে।মঙ্গলবারও ক্যাম্পাসে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
২৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার না থাকা নিয়ে বিক্ষোভ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে ওই অনুষ্ঠানই বাতিল করা হয়। পরে বিকেলে আরেক অনুষ্ঠানে উপাচার্য আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তারা আন্দোলন শুরু করেন। প্রথমে কয়েক দফা দাবি জানানো হলেও পরে এক দফা হিসেবে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। তবে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থার সুষ্ঠু ও সম্মানজনক অবসান চায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাধীনতা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির অনুষ্ঠানে উপাচার্য যে কথা বলেননি তা নিয়েই একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে তৎপর হয়। তখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তার পরও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও কোনো বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা কষ্ট পেয়ে থাকলে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এ অবস্থায়ও কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন অব্যাহত রাখায় একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলেও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের নিচে প্রতিবাদী আল্পনা আঁকেন। এর আগে সকালে তারা একই স্থানে জমায়েত হয়ে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন জারি রাখবেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্যতম লোকমান হোসেন সমকালকে বলেন, এখন আর আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। আন্দোলনের চার দিন পর উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, যা শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। লোকমান বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরব। চলমান সংকটের সমাধান হতে পারে উপাচার্যের পদত্যাগের মাধ্যমেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান সমকালকে বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে চাই। এ জন্য উভয়পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। অন্যথায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব। তিনি বলেন, আন্দোলনের কারণে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব বাড়লে ভবিষ্যতে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে শিক্ষা কার্যক্রমে।
শিক্ষকরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে শিক্ষা কার্যক্রমে তাদের আন্তরিকতা হ্রাস পেতে পারে।
সূত্র: সমকাল