Tuesday, May 14বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

নারী কেলেংকারীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান

বার্তা প্রতিনিধি: একজন নির্বাহী প্রকৌশলী জাতীর বিবেক। সে নাকি একের পর এক নারীর সঙ্গে বৈধ অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে শেষ পর্যন্ত জেলে যেতে হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিক ইমরানকে। তার সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়েও বেরিয়ে এসেছে নানা কেলেঙ্কারি ও কীর্তির তথ্য। উচ্চপদে বসে তিনি ভুলে গিয়েছিলেন নিজের মর্যাদার কথা।

গত বছরের শেষের দিকে চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান আশিক ইমরান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না করিয়ে রঙ্গলীলায় মাতেন আশিক। আর সেটাই হলো তার কাল। ধরা পরে যাবার পর স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলায় জেলে যেতে হয়েছে তাকে।

জানা যায়, বিএনপি সরকারের সময়ে হাওয়া ভবনের আশীর্বাদে সরকারি প্রকৌশলীর পদ বাগিয়েছিলেন আশিক ইমরান। ২০০৫ সালে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। তার কয়েকবছর পর প্রথম বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পরে প্রথম সন্তান জন্ম নেয়ার ৬-৭ মাসেই নতুন নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আশিক ইমরান। এসব ফাঁস হলে স্ত্রীর কাছ থেকে ডিভোর্স পান তিনি।

তবে অবৈধ সম্পর্কের ওই নারীকে বিয়ে করেননি তিনি। দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরেক নারীকে। তবে স্বভাব থেকে যায় আগের মতোই। তার নারীপ্রীতি ও উশৃঙ্খল জীবনযাপন অব্যাহত থাকে। গেল বছরের মাঝামাঝি কোন এক সময়ে আরেক নারীকে নিয়ে ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান আশিক ইমরান।

এবার দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছেও ধরা পড়ে যায় আশিকের কেলেঙ্কারির কীর্তি। তবে এর প্রতিবাদ করায় স্ত্রীর উপর ক্ষুব্ধ হন আশিক। সম্পর্কের অবনতি হলে একপর্যায়ে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। এসব সমাধানে পারিবারিকভাবে বারবার বসা হলেও তাতে সমাধান না আসায় আদালতের দ্বারস্থ হন দ্বিতীয় স্ত্রী। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয় আশিকের নামে। পরে ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ আশিককে আদালতে ডাকা হয়। এসময় আগাম জামিনের জন্য আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। দুইদিন জেলহাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। তবে এতকিছুর পরেও স্বপদে বহাল রয়েছেন তিনি। নেয়া হয়নি আইনি কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। চালিয়ে যাচ্ছেন অফিস। নিয়মিত ভোগ করছেন সরকারি সব সুযোগ সুবিধা।

আইনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হলে বিভাগীয় তদন্ত করা পর্যন্ত তার সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ও দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। কিন্তু আশিকের বেলায় ঘটেছে উল্টো। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, আশিক নিয়মিত অফিসে আসছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। তবে তার অফিসে আসা আইন বহির্ভূত বলে উল্লেখ করেছেন তারা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. জহিরুল হক বলেন, আশিক ইমরানকে পুলিশ আটক করেছে বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তবে শোনার পরপরই তাকে অফিসে হাজির হওয়ার জন্যে আমরা তাকে নোটিশ দেই। কিন্তু সে জামিনে চলে আসে। পরে এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তা জানতে আমাদের আইন উপদেষ্টার কাছে যাই। তার কাছে জানতে চাই যে, কাউকে কাস্টোরিতে নিলেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না কি চার্জশিট বা সাজা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন উপদেষ্টার কাছ থেকে মন্তব্য পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি কাস্টোরিতে নিলেই সাসপেন্ড করতে হয় তাহলে সেটাই করা হবে।

তিনি আরো বলেন, কাস্টোরিতে নেয়ার পর তাকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। সেটার নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে সে এখনো কাজে জয়েন করেনি। তাকে আপাতত কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

আশিকের অফিস চালিয়ে যাবার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসিয়ালি তাকে এখনো কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। শুধু বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তবুও যদি সে অফিস করে তার দায় দায়িত্ব তার নিজের।

এ দিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক প্রকৌশলী শামসুল হক বলেন, ইমরান আশিকের বিষয় দাপ্তরিক কোন সিদ্ধান্তের চিঠি পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো আমি শুনেছি। কিন্তু সিদ্ধান্তের ব্যাপারটা তদন্ত ও শৃঙ্খলা দপ্তর দেখেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত দাপ্তরিক কোন নির্দেশনা আমাকে দেয়া হয়নি। সে অফিসে আসে কিন্তু তার হাজিরা কাউন্ট করা হয় না।

তিনি বলেন, কপি পাইনি বলেই কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। এ সময় তদন্ত শৃঙ্খলা দপ্তরে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি। এছাড়া অফিসিয়ালি তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তাও বলতে পারেননি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এই পরিচালক।তিবি জাতীর এসব বিবেকবান কর্মকর্তাদের এই সব অপকর্মের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্থিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে আরো অপকর্মে জড়িয়ে যেতে পারে বলে সকলের ধারনা।
সূত্র: মানবকন্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *