Thursday, May 2বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

দুর্নীতির শীর্ষে বিসিএমসিএস, ১৮৬ কোটি টাকা ছাড় দিল জ্বালানি সচিব

বার্তা প্রতিনিধি: বাংলাদেশেরে সবচেয়ে বড় ঠিকাদার কোম্পানী বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) চীনা ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামকে ১৮৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিনব এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে সরকারের জ্বালানি বিভাগ। জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের নির্দেশে নিয়মবহির্ভূভাবে বিপুল পরিমাণ এই অর্থছাড় করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায় গত ৬ মার্চ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বৈঠকের সারসংক্ষেপপত্রের ৩.০৯ দফায় বলা হয়েছে, ‘চুক্তি নং বিসিএমসিএল/০৬/১৩৪/২০১১-এর সমাপ্তিকরণ ও রিটেনশন মানি ফেরত প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে বোর্ড সভায় উপস্থাপনের জন্য সচিব মহোদয় মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

এর ভিত্তিতে বোর্ড সভায় উল্লেখিত বিপুল পরিমাণ অর্থ চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে রিলিজ (ছাড়) করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত ও দুর্নীতির শামিল। যুগান্তরের অনুসন্ধানে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

সূত্র জানায়, কথা ছিল চুক্তি শেষে ‘স্কোপ অব ওয়ার্ক’ অনুযায়ী সব ধরনের দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করে ঠিকাদারকে এই টাকা দেয়া হবে। কিন্তু চুক্তি লঙ্ঘন করে পুরো টাকা দিয়ে দিয়েছে বিসিএমসিএল। টাকা পরিশোধের আগে চীনা কনসোর্টিয়ামের বিভিন্ন বিল নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জিওলিজিক্যাল সার্ভে বাংলাদেশের (জিএসবি) সাবেক মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ নিহাল উদ্দিনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার তদন্তেও এই বিল ও জামানত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

কোম্পানির ২৮৯তম পরিচালনা পর্ষদ সভায়ও সিদ্ধান্ত হয়েছিল কোল ইয়ার্ডে মজুদকৃত কয়লার মধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন চুরির বিষয়ে গঠিত কমিটিগুলোর দাখিলকৃত প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে প্রাপ্তির পর সুপারিশ মোতাবেক পরবর্তী বোর্ড সভায় এই টাকা দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।

কিন্তু তা না করে ১৯০তম সভায় চীনের ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামকে পুরো টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, চীনা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ থাকার পরও সেগুলো নিষ্পত্তি না করেই আগেভাগে তাদের সঙ্গে তৃতীয় দফায় চুক্তি করা হয়।

আর এসব বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তার মৌখিক নির্দেশে বিসিএমসিএলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান ১৮৬ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। ফজলুর রহমান বর্তমানে পেট্রোবাংলার জেনারেল ম্যানেজার (মাইনিং) হিসেবে কর্মরত আছেন।

অবশ্য জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার তিনি যুগান্তরের কাছে দাবি করেন, ‘কোনো সভার রেজুলেশনে যদি এ কথা লেখা থাকে তাহলে সেটি সঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম যুগান্তরকে বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ২১২ কোটি টাকার কয়লা চুরির বিষয়টি ইতিমধ্যে প্রমাণিত। দুদক মামলা দায়ের করেছে। মামলা বিচারাধীন। তিনি বলেন, সাধারণত খনিতে দুই রকমের চুরি হয়।

প্রথমত, বিসিএমসিএলের মাধ্যমে কয়লা বিক্রিতে এই চুরি হতে পারে। দ্বিতীয়ত, ঠিকাদারের মাধ্যমে ইনভয়েজ কারসাজির মাধ্যমে অর্থাৎ কম উত্তোলন করে বেশি দেখানোর মাধ্যমে চুরি হতে পারে। কাজেই চুরির মামলা তদন্ত শেষ না করে ঠিকাদারকে জামানতের টাকা ফেরত দেয়া সঠিক হয়নি।

এছাড়া এক চুক্তির টাকা অন্য চুক্তির অর্থ থেকে সমন্বয় করার সুযোগও নেই। একই সঙ্গে জ্বালানি সচিবের মৌখিক নির্দেশে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে কোনোভাবে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। যদিও অদৃশ্য শক্তির ইশারা ছাড়া এটা করা সম্ভব নয় এমডির পক্ষে। তবে আইনে মৌখিক নির্দেশনার কোনো ভিত্তি নেই।

বিষয়টি জানতে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রুহুল আমীনের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে এমনকি গত সপ্তাহে দুই দফায় তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, চীনের এই কোম্পানিসহ বিসিএমসিএলের বিরুদ্ধে ২১২ কোটি টাকার ১ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা চুরির অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের বিরুদ্ধে বিসিএমসিএলের পূর্বানুমোদন ছাড়া চুক্তির বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত ১৫ কোটি টাকার বিল প্রদানের বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে তদন্ত কমিটি।

এছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮০৫ মেট্রিক টন বেশি কয়লা উৎপাদনের বিষয়টিও সুরাহা হয়নি। চুক্তিকালীন চীনা কোম্পানি যেসব কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ (এলডি) আদায় করা হয়নি।

নিয়ম অনুযায়ী চুরির মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর এবং এসব অভিযোগের তদন্ত শেষে এই টাকা দেয়ার কথা। কিন্তু সেটা না করে উল্টো চীনা কোম্পানিকে অতিরিক্ত বিলসহ প্রায় ১৮৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়।

চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লা কোম্পানির চুক্তি অনুযায়ী কয়লা আর্দ্রতার (পানি) পরিমাণ ৫ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। এর বেশি থাকলে বাড়তি পানির দাম বাদ দিয়ে চীনা কোম্পানিকে কয়লার দাম পরিশোধ করার কথা। কিন্তু দেখা গেছে, সরবরাহকৃত কয়লায় এর চেয়ে অনেক বেশি পানি ছিল।

চীনা কোম্পানিকে এই বাড়তি পানির দাম বাদ না দিয়ে কয়লার দামে এই পানির মূল্যও দিয়েছে বড়পুকুরিয়া। কোম্পানিটির বেশির ভাগ কর্মকর্তা বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত চীনা কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত আগের চুক্তির (ক্লোজিং অব কন্ট্রাক্ট) বাকি বিল এবং রিটেনশন মানি আটকে রাখতে বলেছিলেন।

কিন্তু জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের মৌখিক নির্দেশে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে চীনা কোম্পানিকে ওই বিলগুলো পাইয়ে দেন।

জানা গেছে, এই বিল প্রদানের জন্য বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে গত ৬ মার্চ জ্বালানি সচিবের নেতৃত্বে পেট্রোবাংলায় একটি বৈঠক করেন ফজলুর রহমান। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান নিজে, পেট্রোবাংলার পরিচালক অর্থ, পরিচালক অপারেশন অ্যান্ড মাইন্স।

বোর্ড সভায় বলা হয়, বৈঠকে এ টাকার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য পুরো ১৮৬ কোটি টাকা দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে আরও বলা হয়, চীনা কোম্পানি স্কোপ অব ওয়ার্ক অনুযায়ী সব কাজ সম্পন্ন করেছে।

ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে নতুন চুক্তি হয়েছে, যার মেয়াদ ১.৫ বছর শেষ হয়ে গেছে। নতুন চুক্তিতে রিটেনশন মানি (টাকা) কেটে রাখা হচ্ছে। যদি আগের চুক্তিতে চীনা কোম্পানির কাছ থেকে কোনো টাকা পাওনা থাকে তাহলে নতুন চুক্তির সিকিউরিটি মানি থেকে তা সমন্বয় করা হবে।

দফা নম্বর ২০৮৫/২৯০তম সভার রেজুলেশনে উপরোক্ত কথাগুলো উল্লেখ করে বলা হয়, এ অবস্থায় চীনা কোম্পানির সঙ্গে ম্যানেজমেন্ট, প্রডাকশন, মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড প্রভিশনিং সার্ভিসেস চুক্তি নং বিসিএমসিসিএল/৬/১৩৪/২০১১-এর সমাপ্তকরণ ও রিটেনশন মানি ফেরত প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে বোর্ড সভায় উপস্থাপনের জন্য সচিব মহোদয় মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক এমডি ও বর্তমানে পেট্রোবাংলার জিএম (মাইনিং) ফজলুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এই টাকা পরিশোধে কোনো অনিয়ম হয়নি। জ্বালানি বিভাগের সচিব স্যারের মৌখিক নির্দেশে বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, চীনা কেম্পানি তাদের বিল থেকে ৪৪ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে। তাদের সঙ্গে নতুন চুক্তি হয়েছে। যদি কোনো টাকা সমন্বয় করার দরকার হয় তাহলে নতুন চুক্তির রিটেনশন মানি থেকে সমন্বয় করার সুযোগ রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানি খাতে নজিরবিহীন এই অনিয়মের কারণে বিসিএমসিএল এখন ডুবতে বসেছে। চীনা ঠিকাদারকে এই টাকা দেয়ার জন্য ব্যাপক মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিল বিসিএমসিএলের সাবেক এমডি ফজলুর রহমান। পর্ষদ সভায় বলা হয়, নতুন চুক্তিতে চীনা ঠিকাদারের কাছ থেকে রিটেনশন মানি কাটা হচ্ছে।

যদি তাদের কাছ থেকে সরকার কোনো পাওনা পেয়ে থাকে তাহলে নতুন চুক্তির ‘রিটেনশন মানি’ থেকে সেই টাকা সমন্বয় করা হবে। অথচ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইনে এক চুক্তির টাকা অন্য চুক্তিতে সমন্বয়ের কোনো সুযোগ নেই।

যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান পরিচালনা পর্ষদ সদস্যকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চীনা কোম্পানিকে একের পর এক অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি করে বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে তিনি এই সুবিধা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।

চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উন্নয়ন কাজ না করলে ক্ষতিপূরণ (এলডি) দেয়ার কথা। কিন্তু চীনা কোম্পানি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ না করলেও তাদের কাছ থেকে সেজন্য কোনো ক্ষতিপূরণ (এলডি) আদায় করা হয়নি।

যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য অতিরিক্ত বিল এবং স্থানীয় ও বৈদেশিক মালামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে চুক্তির বাইরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে। পরপর ৩টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় এসব বিষয়ে আপত্তি উঠলেও চীনা কোম্পানির পক্ষে সাফাই গেয়ে, মিথ্যা তথ্য ও পর্ষদকে ভুল বুঝিয়ে ১৮৬ কোটি টাকার বিল পাস করে নেয়া হয়।

বিল পাস করার কৌশল হিসেবে চীনা ঠিকাদার কোম্পানি প্রায় সপ্তাহখানেক কয়লা উৎপাদন বন্ধ রাখে। টাকা না দিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কয়লা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দেয় চিনা ঠিকাদার।

এভাবে জিম্মি করে এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম উল্লেখিত বিপুল অঙ্কের টাকা আদায় করে নেয়। জ্বালানি সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যদি সঠিক তদন্ত হয় তাহলে এই টাকা দেয়া তো দূরের কথা, উল্টো চীনা ঠিকাদারের কাছ থেকে সমপরিমাণ টাকা পাবে বিসিএমসিএল।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি ও এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের মধ্যে স্বাক্ষরিত ম্যানেজমেন্ট, প্রডাকশন, মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড প্রভিশনিং সার্ভিসেস অনুযায়ী চুক্তি শেষে চীনা কোম্পানির কাছে কোনো দেনা-পাওনা রয়েছে কিনা সেটা খুঁজে বের করার জন্য সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও জিওলিজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশের (জিএসবি) সাবেক মহাপরিচালক ড. নিহাল উদ্দিনের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটি রিপোর্টে বলছে, চীনা ঠিকাদার চুক্তি শেষে তাদের দেয়া বিলে উল্লেখ করেছে, তারা কয়লা উৎপাদন চুক্তির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮০৫.৭০ টন বেশি উৎপাদন করেছে। কিন্তু তদন্তে দেখা গেছে, এই তথ্য সঠিক নয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কয়লা ওঠানামা করানোর জন্য ৯ টন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি স্কিপ বসানোর কথা।

কিন্তু ঠিদাকার ৮ টন ক্ষমতার দুটি স্কিপ বসিয়েছে। স্কিপ দুটির ক্ষমতা অনুযায়ী বছরে তাদের ১ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন করার কথা। কিন্তু চীনা ঠিকাদার কোম্পানি বছরে কয়লা উত্তোলন দেখিয়েছে ১.২২ মিলিয়ন টন।

অবশিষ্ট টাকা কোম্পানিটি হাতিয়ে নিয়েছে। চীনা কনসোর্টিয়াম তাদের বিলে জানিয়েছে, তারা ডিআরআর থেকে অতিরিক্ত ২২৫০৮.৪৫ মেট্রিক টন কয়লা উৎপাদন করেছে। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, উৎপাদনের এই তথ্য সঠিক নয়।

বিসিএমসিএলের অনুমতি ছাড়া চীনা কনসোর্টিয়াম চুক্তির বরাদ্দের অতিরিক্ত ১৪ কোটি টাকার বিল দাখিল করেছে। এই বিল নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

তদন্ত কমিটি চুক্তি অনুযায়ী সম্পাদিত কাজ, চুক্তির বাইরের কাজ এবং চুক্তিকালীন সময়ের পরে সম্পাদিত কাজের জন্য দাখিলকৃত বিলের আইনগত দিক পর্যালোচনা করতে একজন অভিজ্ঞ আইন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে বলা হয়। কিন্তু তাও যথাযথভাবে করা হয়নি।
সূত্র: যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *