বার্তা প্রতিনিধি: বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইমরুল কায়েস এই নির্দেশ দেন।
তবে এর আগে বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজির করা হয় খন্দকার এনামুল বাছিরকে। তার আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে তার জামিনের আবেদন নাকচ করেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর দারুসসালামের একটি বাসা থেকে বাছিরকে গ্রেফতার করা হয়। রাতেই তাকে রমনা থানাহাজতে হস্তান্তর করা হয়।
দুদক কর্মকর্তা বাছিরসহ পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় ১৭ জুলাই মামলা করে দুদক। ফরেনসিক পরীক্ষায় ঘুষ লেনদেন নিয়ে তাদের কথোপকথনের অডিওর সত্যতা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা মিজান কিছু দিন আগে গ্রেফতার হলেও বাছিরকে গ্রেফতারে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম রাজধানীর শাজাহানপুর ও আজিমপুরে তিন দফা অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক পরিচালক এনামুল বাছির ঘুষগ্রহণ করেছেন, এটি অডিও রেকর্ডে প্রমাণ আছে। অন্যদিকে ডিআইজি মিজান নিজেই ঘুষ দেয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন। দুদক মনে করছে, এর মাধ্যমে মিজান নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিজেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দুজনই ঘুষ লেনদেনে জড়িয়েছেন, যা দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৫(১), ১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) (ক্ষমতার অপব্যবহার) ধারায় অজামিন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মিজান দুদকের মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন। ঘুষ লেনদেন মামলায় এবার সাময়িক বরখাস্ত এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করল দুদক। মামলা করার আগেই বাছিরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ হাতছাড়া করেন। ১০ জুন দুদকে হাজির হয়ে তার ঘুষের বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেদিন এ ব্যাপারে কোনো মতামত দেননি।
এদিকে দুদকের মামলার এজাহারের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় এনামুল বাছিরকে। ওই অনুসন্ধান চলমান অবস্থায় ৯ জুন ডিআইজি মিজান ওই অনুসন্ধান থেকে বাঁচতে এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে। এর পর পরই দুদকের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে খন্দকার এনামুল বাছিরের বক্তব্য গ্রহণ করে এবং পারিপার্শ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে ঘুষ নেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পায়। এর পর ১৩ জুন পরিচালক ফানাফিল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়।
সূত্র: মানবকন্ঠ