Saturday, May 4বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

জেলকোড অনুযায়ী ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ ওসি মোয়াজ্জেমকে

বার্তা প্রতিনিধি: ফেনী মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানিসংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের কারাগারে ডিভিশন পাওয়া-না পাওয়ার বিষয়ে কারাবিধি অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারকে ডিভিশন পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে কারাবিধি অনুসরণের এই নির্দেশ দেন। এর আগে সোমবার সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ আসামির পক্ষে কারাগারে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন প্রদানের আবেদন করেন আইনজীবী ফারুক আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন ওসি হিসেবে নবম গ্রেডের অফিসার। তিনি এখনো চাকরিরত। ২০১২ সালের ৩০ জুলাইয়ের গেজেট অনুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ও নাগরিক। তাই তিনি কারাগারে প্রথম শ্রেণির কয়েদির মর্যাদার সকল সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন । ‘

উল্লেখ্য গত ১৬ জুন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেপ্তার হন। এরপর ১৭ জুন তাকে একই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন একই বিচারক। আগামী ৩০ জুন এ মামলায় চার্জগঠনের দিন ঠিক আছে এবং ওইদিন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

তার আগে গত ২৭ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ মামলায় দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওইদিনই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রীমা সুলতানা প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন।

ঐ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাদীর দাখিলকৃত মামলায় দুজন সাক্ষী এবং ঘটনা সংশ্লিষ্টে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞের মতামত এবং দালিলিক সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গত ২৭ মার্চ বেলা ১টা ১৮ মিনিটে তার ব্যবহৃত মোবাইলের দ্বারা নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করে, যাতে ভিকটিমের ব্যক্তিগত তথ্য পরিচয় প্রকাশ পায়।

তার এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া ধারণকৃত ভিডিও গত ৮ এপ্রিল শেয়ারইট অ্যাপসের মাধ্যমে সজল নামক ডিভাইসে প্রেরণ করে প্রচার করায় একই আইনের ২৯ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।

তবে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভিকটিম নুসরাত অল্প বয়সের একটি মেয়ে এবং মাদ্রাসাছাত্রী ছিলেন। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওসি মোয়াজ্জেমের আরও কৌশলী হয়ে নারী ও শিশু বান্ধব উপায়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন ছিল। সে একজন সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর সদস্য হয়েও নিয়ম বর্হিভূতভাবে ভিকটিম নুসরাতের শ্লীলতাহানির ঘটনার বক্তব্য ভিডিও ধারণ ও প্রচার করে অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। যার ফলে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এদিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা তুলে নেওয়ার জন্য গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফিকে মুখোশ পরা চার থেকে পাঁচজন চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় সে মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে সে মারা যায়। গত কয়েক দিন ধরে এ নিয়ে সারা বাংলাদেশে নুসরাত হ্ত্যাকারীদের বিচার দাবীতে মানব বন্দন সহ বিভিন্ন কর্মচূসি পালন করা হয়।
সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *