Tuesday, May 14বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত ইরানের

বার্তা প্রতিনিধি: ইরানের এক নেতাকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পাঁচ বছর আগের ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে সই করা পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসবে ইরান এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির চিফ অব স্টাফ মাহমুদ ভায়েজি বলেছেন, শেষ বিকল্প হিসেবে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়াই এখন ইরানের লক্ষ্য।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএর বরাত দিয়ে রুহানির চিফ এমন বার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইরানের এ ঘোষণার পর দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র এবং পারমাণবিক চুল্লি তৈরিতে ইউরেনিয়ামের ব্যবহার শুরু করার শঙ্কা প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে।

আইআরএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাহমুদ ভায়েজি বলেন, কেউ কেউ ইরানকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যেতে পারে বলে আলোচনা করেছে। এটি যদি সত্যি হয়, তা হলে আমরা পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।

তিনি বলেন, পারমাণবিক চুক্তি থেকে ইরানের বেরিয়ে যেতে পারে এমন বক্তব্য নতুন নয়। এর আগেও এ সম্ভাবনার কথা প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের লিখিতভাবে তুলে ধরেছিলেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ইরান কেন পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে।

গত সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির নালিশের পর প্রতিক্রিয়ায় এমন বক্তব্য দিলেন মাহমুদ ভায়েজি।

ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ওই তিন রাষ্ট্র যে বিবৃতি দিয়েছে, ইরান পারমাণবিক চুক্তির শর্ত ধীরে ধীরে লঙ্ঘন করছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে, পুরো অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলে চলমান উত্তেজনায় আমরা পারমাণবিক বিস্তারের সংকট যুক্ত করতে পারি না। তেহরান চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় এখন ইরান, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য ভিয়েনায় রাজনৈতিক স্তরের এক বৈঠকে মিলিত হবে। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা হবে।

প্রসঙ্গত পারমাণবিক কর্মসূচি হ্রাস করার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে ২০১৫ সালে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্য ও জার্মানির সঙ্গে ইরান জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামে চুক্তিতে সই করেছিল।

এর পর ইরান চুক্তির শর্ত মানছে না উল্লেখ করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞায় ইরানি মুদ্রার মূল্যমান কমতে কমতে রেকর্ড সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছায়। মূল্যস্ফীতি হয়েছে চারগুণ, হাতছাড়া হতে থাকে বিদেশি বিনিয়োগ।

এর পরও ইরান এতদিন ধরে চুক্তিতে দেয়া সব প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করে আসছেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষকরা।

২০১৫ সালে চুক্তির পর থেকে এ সংস্থাই তেহরানের পারমাণবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

সম্প্রতি ইরানি জেনারেল ও কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহতের পর তেহরান-ওয়াশিংটনের মাঝে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক চুক্তির শর্ত ইরান মানবে না বলে গত ৬ জানুয়ারি ঘোষণা দেয়।
সূত্র: যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *