Friday, September 20বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

চট্টগ্রাম ইপিজেড চৌধুরী মার্কেটে রূপসা কিং গ্রুপে অভিযান ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা জব্দ আটক ৩

বার্তা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকার চৌধুরী মার্কেটে রূপসা কিং গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা জব্দ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান উপস্থিত না থাকায় সেখানে কর্মরত তিন ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে গেছে ডিবি।

গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) অভিযান শুরু করে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অভিযান শেষে জব্দ করা ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা ইপিজেড থানা পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হযেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক তিনজনকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

আটক তিনজন হলো- মুছা হাওলাদার (৩৯), মো. রাসেল হাওলাদার (৩৫) ও মো. গোলাম ফয়সাল (৩৪)। তারা রূপসা মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে পুলিশ।


এদিকে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার ফকিরাপুলে রূপসা মাল্টিপারপাসের শাখা ছিল। ২০১৭ সালে সেখান থেকে গ্রাহকের ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা তারা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ডিএমপির ডিবিতে অভিযোগ দেন কয়েকজন গ্রাহক। সেই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে চট্টগ্রামে অভিযান চালায় ডিবি।

তবে এ বিষয়ে ডিএমপির ডিবির কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযান চলাকালে মঙ্গলবার অভিযান শুরু হলে প্রথমে উৎসুক জনতা ভিড় করে। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে সেখানে অভিযান চালানোর খবর চড়িয়ে পড়লে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে গ্রাহকে সংখ্যা। মঙ্গলবার রাত প্রায় ২ টার দিতে প্রথম অভিযান শেষ হওয়া পর্যন্ত কয়েক হাজার গ্রাহকের সমাগম দেখা যায়। পরে বুধবার আবার অভিযান শুরু করেন কর্মকর্তারা। মঙ্গলবারে ইপিজেড থানার অসি তদন্ত ওসমান গনী বলেন নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা থেকে অভিযান চালানো হয় তদন্তের সার্থে এই ব্যপারে এখনো কোন কিছু বলা যাবেনা।

ইপিজেড মোড়ে চৌধুরী মার্কেটের ওই কার্যালয়ে অভিযান চালানোর সময় প্রতিষ্ঠানটির কয়েক হাজার গ্রাহক ওই এলাকা ঘেরাও করে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং নিজেদের জমা টাকা ফেরত চান। অর্থ জমা রাখা গ্রাহকদের মধ্যে বড় একটা অংশই নারী শ্রমিক। সেলিনা আক্তার নামের এক পোশাকশ্রমিক সাংবাদিকদের বলেন, মাসিক কিস্তিতে ৭০ হাজার টাকা জমা রেখেছেন। লাভ তো দূরের কথা, পারিবারিক প্রয়োজনে টাকাগুলো ফেরত চেয়েও পাননি তিনি। মোকারম হোসেন নামের আরেক পোশাকশ্রমিক জানান, তাঁর ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা হলেও তিনি টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রেপ্তার মুছা হাওলাদারসহ রূপসা কিং গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ইপিজেড কলসিদিঘির পাড় এলাকায় দুটি বহুতল ভবন রয়েছে। এ ছাড়া নগরের পতেঙ্গা এলাকায় জমিও কিনেছেন। মূলত গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়েই তাঁরা এসব করেছেন।

বুধবারে ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, চৌধুরী মার্কেটে রূপসা মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা জব্দ করেছে ডিএমপির ডিবি। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে গেছে ডিবি।

ওসি মীর মোহাম্মদ নুরুল হুদা জানান, ২০০৬ সাল থেকে ইপিজেড এলাকায় পরিচালিত হয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে অন্যান্য গ্রাহক ছাড়[ প্রায় ইপিজেডের ১ লক্ষের মতো গ্রাহক রয়েছে। রূপসা মাল্টিপারপাসের গ্রাহকরা অধিকাংশ পোশাক কারখানার শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জানা যায় রুপসা মাল্টিপারপাস এখন রুপসা কিং নামে পরিচিত। এত বিপুল পরিমান অর্থ তাদের হয়েছে সেগুলো রাখার পরে রুপসা পাউন্ডেসক খুলে। একটি মাল্টিপারপারে এত বিপুল অর্থ জমা থাকায় অনেকের ধারনা এটি ক্যাসিনোকেউ হার মানিয়ে দিল। তবে অভিযানের জমন অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কারন শ্রমিকদের এফডিআরের মাধ্যমে অনেকে সেখানে টাকা জমা রাখতেন।
ওসি মীর নুরুল হুদা বলেন, জব্দ করা টাকা ইপিজেড থানার পুলিশের জিম্মায় দিয়ে গেছে ডিবি। গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আজ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *