Sunday, May 19বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

অবশেষে সৌদী আরবে নির্যাতিতা সুমি আগামী শুক্রবার দেশে ফিরছেন

বার্তা প্রতিনিধি: অবশেষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সৌদি আবর থেকে ফিরছেন নির্যাতিতা সুমি। জানা যায় সৌদী আরবে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরে বিশ্বব্যাপী সংবাদ শিরোনাম হওয়া বাংলাদেশি সেই সুমি আক্তারকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

আগামী শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টায় এয়ার অ্যারাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের ফার্স্ট সেক্রেটারি (শ্রম) কে এম সালাউদ্দিন জানিয়েছেন।

জেদ্দা কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সৌদি আরবের নাজরান শহরের শ্রম আদালতে সুমির বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে।

ওই আদালত সুমির কফিলের (নিয়োগকর্তা) দাবিকৃত ২২ হাজার সৌদি রিয়াল পরিশোধের আবেদন নামঞ্জুর এবং সুমিকে ‘ফাইনাল এক্সিট’ (দেশে ফেরার অনুমতি) প্রদানের আবেদন মঞ্জুর করে।

কনস্যুলেট জানিয়েছে, শ্রম আদালতের আদেশের পর সুমি আক্তারকে তার বর্তমান কফিল তাৎক্ষণিকভাবে ‘ফাইনাল এক্সিট’ দিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেদ্দা শহর থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাজরান শহরের শ্রম আদালতে গৃহকর্মী সুমি আক্তারের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে সুমি আক্তার, তার নিয়োগকর্তা ও কনস্যুলেট প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরবে পাশবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছে সৌদি প্রবাসী নারী সুমি আক্তার (২৬)।

ভিডিওতে সুমি বলেন, ‘ওরা আমারে মাইরা ফালাইব, আমারে দেশে ফিরাইয়া নিয়া যান। আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়ে যান। আর কিছু দিন থাকলে আমি মরে যাব।’

সুমির পরিবার জানায়, ২০১৬ সালে নুরুল ইসলাম সুমি আক্তারকে বিয়ে করেন। সুমি পঞ্চগড় জেলার বোদা সদর থানার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামী আগেও বিয়ে করেছেন।

বাধ্য হয়ে সুমি সতীনের সংসার শুরু করেন। বিয়ের দেড় বছর পর সুমির সংসারেও একজন সন্তান জন্মায়। সতীনের বিভিন্ন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের সন্তানকে মানুষ করার জন্য বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সুমি। এ জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে গৃহকর্মীর ট্রেনিং শেষ করেন সুমি।

তখন বিনামূল্যে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে সেটি হাতছাড়া করতে চাননি সুমি। দালালদের দেখানো লোভ আর বিদেশে গিয়ে ভালো টাকা আয়ের আশ্বাসে বিনামূল্যে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে পাড়ি জমান নিম্নবিত্ত ঘরের এই গৃহবধূ।

কিন্তু দালালরা বিদেশে পাঠানোর কথা বলে যে বিক্রি করে দিয়েছে সে কথা জানতেন না সুমি। সৌদি যাওয়ার সপ্তাহখানেক পর থেকে শুরু হয় তার ওপর মারধর, যৌন হয়রানিসহ নানা নির্যাতন।

সম্প্রতি ফেসবুকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান সুমি। পরবর্তী ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

এরপর জেদ্দা কনস্যুলেটের হস্তক্ষেপে সুমিকে নিয়োগকর্তার বাড়ি থেকে নিয়ে আসে পুলিশ। কিন্তু পাওনা ২২ হাজার রিয়াল পাওয়ার আগে তাকে ‘ফাইনাল এক্সিট’ দেবেন না বলে তখন জানিয়েছিলেন তার কফিল।
সূত্র: যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *