বিশ্ব বার্তা: ৩য় বিশ্বযুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ জেরে ইউক্রেন থেকে কোনো খাদ্যশস্য বের করে আনা যাচ্ছে না। ফলে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জন্য খাদ্যসংকট এমনকি অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে সতর্ক করে আসছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। এবার ইতালিও কড়া ভাষায় সেই একই বার্তা দিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সৃষ্ট খাদ্যসংকট কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে যেতে পারে তা তুলে ধরে ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইজি দাই মাইও বুধবার বলেন, সংকট সমাধানের জন্য সামনের কয়েক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বৈশ্বিক খাদ্যসংকট নিয়ে ভূমধ্যসাগরীয় মন্ত্রীদের এক ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ইতালির শীর্ষ কূটনীতিক আরো বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট বার্তা চাই। কারণ খাদ্যশস্য রপ্তানি আটকে রাখার মানে হলো জিম্মি করে রাখা এবং লাখ লাখ শিশু, নারী ও পুরুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া।
গম, ভুট্টা, সূর্যমুখী তেলসহ বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের অন্যতম বড় উৎস ইউক্রেন। যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। সংকট সমাধানে নিছক কথাবার্তা ও পরস্পরকে দোষারোপ ছাড়া তেমন অগ্রগতি হয়নি এখন পর্যন্ত। বুধবারও জাতিসংঘের অনুরোধে বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসে তুরস্ক।
ইউক্রেন থেকে শস্যবাহী নৌবহরকে পাহারা দেওয়ার প্রস্তাব দেয় আংকারা। বুধবার তুরস্কের রাজধানী আংকারায় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এসংক্রান্ত আলোচনার পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু সেখানে কোনো সমাধানের বার্তা মেলেনি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভ বলেছেন, ‘কোনো রকম বাধা ছাড়াই সব গন্তব্যে শস্য পরিবহন করা যেতে পারে। রাশিয়ার দিক থেকে কোনো বাধা নেই। ’ খাদ্যসংকটের দায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির ঘাড়ে চাপিয়ে তিনি বলেন, ‘কৃষ্ণ সাগরে বিদেশি ও ইউক্রেনীয় জাহাজ প্রবেশে জেলেনস্কি সাহেবের অনুমোদন দেওয়াটা জরুরি, অবশ্য তিনি যদি আদৌ কোনো দায়িত্বে থাকেন। ’ শীর্ষ রুশ কূটনীতিক আরো বলেন, ইউক্রেন নিজেদের বন্দরগুলো মাইনমুক্ত করলে শস্য পরিবহনকালে কোনো হামলা না করার নিশ্চয়তা দেবে রাশিয়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তুর্কি কূটনৈতিক সূত্র বলেন, ‘আমরা খাদ্য করিডরের একটা পরিকল্পনা তৈরি করে তা রাশিয়ার কাছে উপস্থাপন করেছি। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে আপনারা তো দেখলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের কোর্টে বল ঠেলে দিল। ’
সেভেরোদোনেত্স্ক পরিস্থিতি : রুশ হামলার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সেভেরোদোনেত্স্ক শহরের পরিস্থিতি তুলে ধরে লুহানস্কের মেয়র সেরগি গাইদে বলেন, ‘সম্ভবত আমাদের পিছু হটতে হতে পারে। ’ ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থান আরো মজবুত করার জন্য তা করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মস্কো গত মঙ্গলবার দাবি করেছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বৃহত্তম শহর সেভেরোদোনেত্স্কের সব আবাসিক এলাকা এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। আর কিয়েভ বলেছে, শহরের শিল্প এলাকা ও আশপাশের স্থাপনা এখনো ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে। এর মধ্যে লুহানস্কের মেয়র নিজেদের পিছু হটার সম্ভাবনার কথা বললেন।
সূত্র : এএফপি ও কালের কন্ঠ
আমি আশা করব ভারত সরকার এদের সঠিক বিচার করবে