Saturday, July 27বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

টানা তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদি সফথও নিলেন যোগ দিলেন দেশ–বিদেশের প্রায় ৮ হাজার বিশিষ্টজন

টানা তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায় বসলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার নতুন জোট সরকারের ৭২ জন মন্ত্রীর সঙ্গে রবিবার (০৯/০৬/২০২৪) শপথ নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাদের মধ্যে ৩০ জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী, পাঁচজন স্বতন্ত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। তাদের মন্ত্রণালয়ের তালিকা পরে ঘোষণা করা হবে।

নির্বাচনের একদিনের মাথায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের লনে শপথ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রধানমন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করান। প্রধানমন্ত্রী মোদির পর শপথ নেন রাজনাথ সিং ও অমিত শাহ। নিতিন গড়কড়ী চতুর্থ নেতা, যিনি শপথ গ্রহণ করেন। এরপর একে একে জেপি নাড্ডা, শিবরাজ সিং চৌহান, নির্মলা সীতারমন, এস জয়শঙ্কর ও মনোহর লাল খট্টর শপথ গ্রহণ করেন।

অন্যান্য দলের সাথে ভারতের জনতা দলের (ধর্মনিরপেক্ষ) এইচ ডি কুমারস্বামী খট্টরের পর শপথ নেন, যিনি জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটে (এনডিএ) বিজেপির সহযোগীদের মধ্যে শপথ নেওয়া প্রথম নেতা।
নরেন্দ্র মোদির সফথ অনুষ্টানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজুসহ ভারতের প্রতিবেশী ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন।

ইতিহাস রচনায় জওয়াহেরলাল নেহরুর পর মোদি দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বারানসি থেকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে দেড় লাখ ভোটে জিতেছেন।

নরেন্দ্র মোদির সফথ অনুষ্ঠান

যারা যারা থাকবেন ঐ সফথ অনুষ্ঠানে:-

শপথের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল দিল্লি পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আরও ছয় দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন। সেশেলসের উপরাষ্ট্রপতি আহমেদ আফিফও গতকাল দিল্লি পৌঁছান। খবর এনডিটিভির

জানা গেছে রোববার দুপুরের মধ্যে একে একে উপস্থিত হবেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথ, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোগবে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে বিদেশি অতিথিরা নৈশভোজের আসরে যোগ দেবেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
এছাড়াও মালদ্বীপের নির্বাচনের পর সে দেশের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর এটাই হবে প্রথম ভারত সফর। দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে জানা গেছে, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেশ–বিদেশের প্রায় ৮ হাজার বিশিষ্টজনকে।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ফল প্রকাশের আগে ধারণা করা হয়েছিল, নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বের হ্যাটট্রিক উদ্‌যাপন করা হবে জনতার দরবারে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি বরাবর ছুঁতে আগ্রহী ছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড। নেহরু ১৯৫২, ১৯৫৭ ও ১৯৬২ সালের নির্বাচনে জিতে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিটি জয়ই ছিল নিরঙ্কুশ। কারও সহায়তা ছাড়াই তিনি সরকার গড়েছিলেন। মোদি সেখানে ব্যর্থ। হ্যাটট্রিকের বছরে তাকে জোট শরিকদের সাহায্য নিতে হচ্ছে সরকার গঠনের জন্য।

নির্বাচনের প্রচারনায় ও তার নেতৃত্বের বিশ্বাসে নরেন্দ্র মোদি আরও চেয়েছিলেন ১৯৮৪ সালের ভোটে রাজীব গান্ধীর জেতা ৪১৩ আসন টপকে নতুন রেকর্ড গড়তে। চার শ পার স্লোগানের অন্য লক্ষ্যও ছিল তা। দুই ইচ্ছার কোনোটিই পূরণ না হওয়া এবং এই জয় ‘অসম্মানের ও পরাজয়তুল্য’ বলে প্রচারিত হওয়ায় কর্তব্য পথে শপথ গ্রহণের অভিলাষ ত্যাগ করতে হয় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে।
এদিকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবনের কাছাকাছি বিশাল তল্লাটকে ‘নো ফ্লাই জোন’–এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিমান তো দূরের কথা, ফানুস বা ড্রোনও ওই এলাকায় ওড়ানো বা চালানো যাবে না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রির নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদির শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে। সরকারি প্রচার মাধ্যম দূরদর্শন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। প্রতিটি পর্ব সরাসরি প্রচার হবে ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়াও শপথের অনুষ্ঠান ভারতের প্রেসিডেন্টের ইউটিউব চ্যানেল এবং তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচার করা হবে।

এদিকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরুর পরই বোঝা যাবে প্রথম দফায় মোট কতজন পূর্ণ মন্ত্রী ও কতজন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন এবং কোন দলের কতজন মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন। শপথ গ্রহণের পর নতুন মন্ত্রীদের কে কোন দপ্তর পাচ্ছেন, তা সরকারিভাবে জানানো হয়। গত শুক্রবার থেকেই শরিক নেতারা তাদের চাহিদার বিষয়টি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন।

শরিক জোট টিডিপি তিন থেকে চারটি মন্ত্রণালয় চাইছে, যার মধ্যে অন্তত দুজন হবেন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের পূর্ণ মন্ত্রী। সংসদে টিডিপির মোট সদস্যসংখ্যা ১৬। জেডি–ইউর দাবিও দুই পূর্ণ মন্ত্রীর। বিজেপি আবার প্রধান চার মন্ত্রণালয়ের একটিও কাছছাড়া করতে চায় না। অর্থ, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই চার মন্ত্রীই হচ্ছেন নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত–সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির সদস্য। সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ওই পাঁচজনেই নিয়ে থাকেন। বিজেপি চায় না সেখানে ভিন দলের কেউ দখল নিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *