Thursday, September 19বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও নারীদের সুবিচারে আইন করছে সরকার

বার্তা প্রতিনিধি: বাংলাদেশ সরকার সমাজের পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তি বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অধিকার ও সুবিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে বলে মত ব্যাক্ত করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ।

তিনি গত শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে সরকারি আইনি সেবার ভূমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশের জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বিকাশ কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বক্তৃতা করেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, নারী ও শিশুদের অধিকার ও সুবিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে। যা নারী ও শিশুর অধিকার এবং তাদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। তারপরও নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার বা বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনও অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছেন। ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তাদের অনেকে সহিংসতারও শিকার হচ্ছেন। যা মোটেই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, নারীরা শুধু শারীরিকভাবেই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন না, তারা বিভিন্ন উপায়ে মানসিকভাবেও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। যদিও মানসিকভাবে সহিংসতার শিকারের ঘটনাগুলো আমাদের সামনে সেভাবে প্রকাশ পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, মানসিক সহিংসতার কারণে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটছে ও নারীরা মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর প্রভাব অনেক সময় পুরো পরিবারের উপরই পড়ছে।

তিনি বলেন, পরিবারকেন্দ্রিক নারীর প্রতি এসব শারীরিক ও মানসিক সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার ২০১০ সালে ‘পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন’ এবং ২০১৩ সালে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের প্রয়োগ আমরা খুব একটা দেখতে পাচ্ছি না। তার মানে এই আইন সম্পর্কে তারা এখনও পুরাপুরি জানে না। তাই এই আইন সম্পর্কে নারীদের পাশাপশি পুরুষদেরও জানাতে হবে। আর এজন্য প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, পরিবারকেন্দ্রিক সহিংসতার শিকার নারীরা দেশে প্রচলিত আইন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন হলে এবং তাদের সাথে ঘটে যাওয়া অপরাধসমূহ আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করালে এদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

তিনি বলেন, সরকার নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ও নারীদের অধিকার ও সুবিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিনাখরচে তাদের সরকারি আইনি সেবা প্রদান করছে। ‌’আইনগত সহায়তা প্রদান আইন- ২০০০’-কে নারীবান্ধব আইন উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, এই আইনের আওতায় নারী সেবা গ্রহীতার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সহিংসতার শিকার নারীরা এখন ঘরে বসেই জাতীয় আইনগত সহায়তা আইনের অধীনে ‘১৬৪৩০’ হেল্পলাইনে ফোন করে সরকারি আইনি সেবা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৮৬ জন নারী বিনা খরচে সরকারি আইনি সেবা নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। নারী নির্যাতনের অনেক খবর সরকারের কাছে পৌঁছায় না। তাই নারীর প্রতি সহিংসতার অভিযোগ পেলে তা সরকারি লিগ্যাল এইড অফিসে পৌঁছানোর বিষয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সহযোগিতার আহবান জানান।

আইনমন্ত্রী বলেন, নারীরা যদি জানে যে, তার বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি বা সালিশের মাতববর সাহেবরাই শেষ ভরসাস্থল নয়, তাদের ভরসার আরও জায়গা আছে- তাহলে তারা সেখানে তথা লিগ্যাল এইড অফিসে যাবে। এ বিষয়ে নারীদের আরো সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে এবং তাদের অভয় দিতে হবে। তবে যে কোন অভিযোগ দ্রুত খতিয়ে দেখতেও তিনি নির্দেষ দেন। সমাজের অবহেরিত নারী ও শিশুরা যেন অবহেলিত আর না থাকে তার দিকে সমাজের সর্বস্তরের সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।

খবর: আলোকিত বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *