Saturday, April 27বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

মাদাকের পাশাপাশি যৌনতার দিকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

বার্তা প্রতিনিধি: অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। মাদকের পাশাপাশি এবার শিক্ষার্থীরা ঝুকছে যৌনতার দিকে। দেখা যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে এখন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে স্কুল-কলেজগামী কিশোর-যুবকদের আনাগোনা। সুস্থ বিনোদনের অভাব, নিষিদ্ধের প্রতি আকর্ষণ, সহজ প্রাপ্যতা এবং যৌন ও নৈতিক শিক্ষার অভাবেই কিশোররা এ পথে আসছে বলে মনে করেন সমাজকর্মীরা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে ধারালো চাকুসহ আটক করা হয় দুই কলেজছাত্রকে। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে আদালত দু’জনকে মোট ৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আজ যাদের শাস্তি দিলাম, তাদের শিক্ষাঙ্গনে থাকার কথা। অথচ তারা আটক হয়েছে যৌনপল্লী থেকে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে না পারলে এবং এসব বিষয়ে অভিভাবকরা আরও সচেতন না হলে কিশোর-যুবকদের অনেকেই অন্ধকার জীবনে ঢুকে পড়বে। তাই এদের নিয়ে ভাবতে হবে সবাইকে।’

দৌলতদিয়া যৌনপল্লী-সংশ্নিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যৌনপল্লীতে আগতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কিশোর-যুবক। যাদের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর। স্থানীয় স্কুুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ জেলা থেকে কিশোর-যুবকরা দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে আসে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও এই বয়সের কিশোররা দলবেঁধে পল্লীতে এসে থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি স্থানীয় সুধীজন ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ বিষয়টি উঠে আসে। মতবিনিময়ে গোয়ালন্দের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে যাদের শাস্তি দিচ্ছি, তাদের শিক্ষাঙ্গনে থাকার কথা। অথচ তারা আটক হচ্ছে যৌনপল্লী থেকে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও অভিভাবকরা সচেতন না হলে এ অঞ্চলের কিশোর-যুবকদের অনেকেই অন্ধকার জীবনে ঢুকে পড়বে। এসব কিশোরকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত করতে না পারলে আগামী প্রজন্ম ভবিষ্যতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না। সম্প্রতি যৌনপল্লী থেকে বেশ কয়েকজন কিশোরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ বিষয়টি আমাকে হতাশ করেছে। এ সময় গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মো. নিজাম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি এজাজ শফী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে একাধিক খুনের ঘটনায় এখানে আগতদের দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে। মঙ্গলবার এরই অংশ হিসেবে ওই দুই যুবকের দেহ তল্লাশি করে ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে আদালত একজনকে ৫ হাজার টাকা ও অপরজনকে ৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।

যৌনপল্লীর শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেকেএসের কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, যৌনপল্লী ও বাইরের কিশোর-যুবকরা সঠিক গাইডলাইন ও সুস্থ পরিবেশের অভাবে অবাধ যৌনাচার, মাদকাসক্তি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, আমাদের আইনে যৌনপল্লী সম্পর্কে কোনো নীতিমালা নেই। তারপরও চলছে। যৌনপল্লীতে বর্তমানে পুলিশের বিশেষ নজরদারি চলছে। কিশোর বা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যৌনপল্লী এলাকায় দেখা গেলে তাদের আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *