Tuesday, May 14বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

বিপুল পরিমান নগদ অর্থ মদ ও আগ্নেয়াস্ত্র সহ জিকে শামীম গ্রেফতার

বার্তা প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় যুবলীগের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পেয়েছে র‌্যাব।

ঢাকার নিকেতনের ওই অফিস থেকে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে এই অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নিকেতনের ওই পাঁচতলা ভবন ঘিরে তাদের অভিযান শুরু হয়, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শামীমকে নিকেতন থেকে র‌্যাব-১ কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

তার আগে বিকালে র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার কাগজপত্র তারা শামীমের অফিস কক্ষে পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর শামীমের মায়ের নামে, বাকিটা তার নিজের নামে।

পাশাপাশি ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার এবং ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার সেখানে পাওয়া গেছে।

সারওয়ার আলম বলেন, “মোট আটটি আগ্নেয়াস্ত্র আমরা পেয়েছি। এগুলো বৈধ অস্ত্র বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তবে এগুলোর অবৈধ ব্যবহারের তথ্য রয়েছে।”

শামীম রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত। গণপূর্ত ভবনে ঠিকাদারি কাজে তার দাপটের খবর ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এক সময় যুবদলের রাজনীতি করা শামীম পরে যুবলীগে ভেড়েন। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়েই তিনি প্রভাব খাটিয়ে আসছিলেন।

তবে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ বলেছে, জি কে শামীম নামে কেউ তাদের কমিটিতে নেই। জি কে শামীমের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কও নেই।

যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা জি কে শামীমের গুলশানের নিকেতনের অফিসে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পেয়েছে র‌্যাব। সাত দেহরক্ষীসহ শামীমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রামের মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম থাকেন বনানীর ডিওএইচএসে। আর নিকেতনে ৫ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর ভবনটি তিনি তার জিকে বিল্ডারস অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন।

র‌্যাব সদর দপ্তর, সচিবালয় ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ এখন জিকে বিল্ডার্সের হাতে রয়েছে বলে শামীমের ফুপাত ভাই মহিউদ্দিন লিটুর ভাষ্য। তার দাবি, এসব প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

শামীমের চলাফেরার সময় শটগানধারী ছয় দেহরক্ষীর ‘প্রটেকশন’ নিয়ে শুক্রবার সকালেই কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাকে বৃহস্পতিবারই আটক করেছে- এমন গুঞ্জনও শোনা যায়। তবে নিকেতনের জিকেবি ভবনে র‌্যাব সদস্যদের তৎপরতা প্রকাশ্য হয় শুক্রবার সকালে।

র‌্যাব বলছে, টাকা ও মদের বোতল শামীমের কক্ষেই পাওয়া গেছে। তিনি যে চেয়ারে বসেন, তার পাশে একটি সিন্দুক ছিল। চাবি দিয়ে সেই সিন্দুক খোলার পর নগদ টাকার বান্ডিল, এফডিআর ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই পাওয়া যায়।

শামীমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের কাছে দাবি করেন, সব টাকা ও এফডিআর জব্দ করা হয়েছে তার ‘পুরোটাই বৈধ’।

এই মুহূর্তে প্রায় ১০ হাজার লেবার আমাদের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করছে। আর প্রায় দেড়শ অফিস স্টাফ রয়েছে। প্রতিদিন এত লোকের বেতন দিতে, প্রজেক্টের জিনিসপত্র কিনতে নগদ টাকার প্রয়োজন হয়। প্রতিদিনই কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয় এই অফিসে আর সাইটে।

একই অফিসের কর্মচারী মো. সুজন বলেন, কোম্পানির হাতে এখন যে কাজ আছে তার আর্থিক পরিমাণ ‘ছয় হাজার কোটি টাকার নিচে নয়’ এর প্রায় সবটাই গণপূর্তের কাজ।

এদিকে জিকেবি অফিসে অভিযান শেষে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শামীমের বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবজি ও টেন্ডারবাজির’ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরই তারা এই অভিযানে এসেছেন। বাসা ঘেরাও করে প্রথমে তার সাতজন বডিগার্ড আমিনুল, কামাল, শহিদুল, মুরাদ, দেলোয়ার, জাহেদ ও সায়েমকে অস্ত্র গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে তার অফিস কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়।

আর র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বলেন, “কিছু সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে আমরা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার এফডিআর পেয়েছি। এর মধ্যে তার মায়ের নামে আছে ১৪০ কোটি টাকার মত। অথচ উনার মায়ের বড় কোনো ব্যবসা নেই।”

ব্যবসায়ী হিসাবে নগদ টাকা অফিসে থাকতেই পারে মন্তব্য করে নির্বাহী হাকিম বলেন, “সুনিদিষ্ট দুটি বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তার একটি মানিলন্ডারিং এবং তার যে অস্ত্র রয়েছে, তার যারা দেহরক্ষী রয়েছেন সাতজন, তারা বিছু কিছু জায়গায় অস্ত্র প্রদর্শন করে টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি করেছেন, সেই অভিযোগগুলো রয়েছে। একই সাথে কিছু মদ পাওয়া গেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মূলত এই অপরাধের কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সারওয়ার আলম বলেন, শামীমকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি নির্দোষ। তা করতে পারলে তিনি অবশ্যই ছাড়া পাবেন। না করতে পারলে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। তবে অভিযাগগুলো এখনও তদন্তাধীন।

যে অর্থ এফডিআর করা হয়েছে, তা অবৈধ পন্থায় অর্জন করা হয়েছে- এমন তথ্য রয়েছে । কীভাবে এসব অর্থ পেয়েছেন এটা প্রমাণ করার দায়িত্ব তার। তিনি বৈধভাবে অর্জন করতে পারেন, কিন্তু বৈধকাজের আড়ালে অবৈধ কিছু রয়েছে কিনা সেটা দেখার জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।

যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা জি কে শামীমের নিকেতনের অফিসে শুক্রবার অভিযান চালায় র‌্যাব। ছবি:আব্দুল্লাহ আল মমীন

শামীমের অফিসের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে দেখা যায় নানা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া পুরস্কারের ক্রেস্ট সাজানো রয়েছে। পুরো ভবনের বিভিন্ন তলায় রয়েছে তার কর্মকাণ্ডের নানা ছবি।

অফিসের বোর্ড রুম ও বিভিন্ন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, র‌্যাব মহাপচিালকের সঙ্গে শামীমের ছবিসহ দলীয় কর্মকাণ্ডের নানা ছবি দেখা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বড় ছবি কনফারেন্স রুমে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ছবির নিচে শামীমের পরিচয় লেখা হয়েছে ‘নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও ‍যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক’ ।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যুবলীগে জি কে শামীমের কোনো পদ নেই। সে নিজেই নিজেকে সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বলে বেড়াতো। এ নিয়ে যুবলীগে কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে।”

বাবলু বলেন, “জিকে শামীম এক সময় যুবদলের সাবেক সহ সম্পাদক ছিল। এখন সে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বলে শুনেছি।”

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, “জি কে শামীম নামে আমাদের কোনো সহ সভাপতি বা সদস্যও নাই।”

শামীমের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বলেন, দলীয় পরিচয় দল থেকেই নিশ্চিত করা হবে। আর শামীম ঠিকাদারী ব্যবসার আড়ালে অবৈধ কিছু করেছেন কি না- সেটা তারা দেখবেন।

বার্তা প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় যুবলীগের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পেয়েছে র্যাব।
ঢাকার নিকেতনের ওই অফিস থেকে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে এই অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নিকেতনের ওই পাঁচতলা ভবন ঘিরে তাদের অভিযান শুরু হয়, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শামীমকে নিকেতন থেকে র্যাব-১ কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

তার আগে বিকালে র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার কাগজপত্র তারা শামীমের অফিস কক্ষে পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর শামীমের মায়ের নামে, বাকিটা তার নিজের নামে।

পাশাপাশি ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার এবং ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার সেখানে পাওয়া গেছে।

সারওয়ার আলম বলেন, “মোট আটটি আগ্নেয়াস্ত্র আমরা পেয়েছি। এগুলো বৈধ অস্ত্র বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তবে এগুলোর অবৈধ ব্যবহারের তথ্য রয়েছে।”

শামীম রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত। গণপূর্ত ভবনে ঠিকাদারি কাজে তার দাপটের খবর ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এক সময় যুবদলের রাজনীতি করা শামীম পরে যুবলীগে ভেড়েন। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়েই তিনি প্রভাব খাটিয়ে আসছিলেন।

তবে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ বলেছে, জি কে শামীম নামে কেউ তাদের কমিটিতে নেই। জি কে শামীমের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কও নেই।

যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা জি কে শামীমের গুলশানের নিকেতনের অফিসে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পেয়েছে র্যাব। সাত দেহরক্ষীসহ শামীমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রামের মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম থাকেন বনানীর ডিওএইচএসে। আর নিকেতনে ৫ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর ভবনটি তিনি তার জিকে বিল্ডারস অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন।

র্যাব সদর দপ্তর, সচিবালয় ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ এখন জিকে বিল্ডার্সের হাতে রয়েছে বলে শামীমের ফুপাত ভাই মহিউদ্দিন লিটুর ভাষ্য। তার দাবি, এসব প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

শামীমের চলাফেরার সময় শটগানধারী ছয় দেহরক্ষীর ‘প্রটেকশন’ নিয়ে শুক্রবার সকালেই কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাকে বৃহস্পতিবারই আটক করেছে- এমন গুঞ্জনও শোনা যায়। তবে নিকেতনের জিকেবি ভবনে র্যাব সদস্যদের তৎপরতা প্রকাশ্য হয় শুক্রবার সকালে।

র্যাব বলছে, টাকা ও মদের বোতল শামীমের কক্ষেই পাওয়া গেছে। তিনি যে চেয়ারে বসেন, তার পাশে একটি সিন্দুক ছিল। চাবি দিয়ে সেই সিন্দুক খোলার পর নগদ টাকার বান্ডিল, এফডিআর ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই পাওয়া যায়।

শামীমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের কাছে দাবি করেন, সব টাকা ও এফডিআর জব্দ করা হয়েছে তার ‘পুরোটাই বৈধ’।

এই মুহূর্তে প্রায় ১০ হাজার লেবার আমাদের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করছে। আর প্রায় দেড়শ অফিস স্টাফ রয়েছে। প্রতিদিন এত লোকের বেতন দিতে, প্রজেক্টের জিনিসপত্র কিনতে নগদ টাকার প্রয়োজন হয়। প্রতিদিনই কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয় এই অফিসে আর সাইটে।

একই অফিসের কর্মচারী মো. সুজন বলেন, কোম্পানির হাতে এখন যে কাজ আছে তার আর্থিক পরিমাণ ‘ছয় হাজার কোটি টাকার নিচে নয়’ এর প্রায় সবটাই গণপূর্তের কাজ।

এদিকে জিকেবি অফিসে অভিযান শেষে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শামীমের বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবজি ও টেন্ডারবাজির’ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরই তারা এই অভিযানে এসেছেন। বাসা ঘেরাও করে প্রথমে তার সাতজন বডিগার্ড আমিনুল, কামাল, শহিদুল, মুরাদ, দেলোয়ার, জাহেদ ও সায়েমকে অস্ত্র গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে তার অফিস কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়।

আর র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বলেন, “কিছু সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে আমরা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার এফডিআর পেয়েছি। এর মধ্যে তার মায়ের নামে আছে ১৪০ কোটি টাকার মত। অথচ উনার মায়ের বড় কোনো ব্যবসা নেই।”

ব্যবসায়ী হিসাবে নগদ টাকা অফিসে থাকতেই পারে মন্তব্য করে নির্বাহী হাকিম বলেন, “সুনিদিষ্ট দুটি বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তার একটি মানিলন্ডারিং এবং তার যে অস্ত্র রয়েছে, তার যারা দেহরক্ষী রয়েছেন সাতজন, তারা বিছু কিছু জায়গায় অস্ত্র প্রদর্শন করে টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি করেছেন, সেই অভিযোগগুলো রয়েছে। একই সাথে কিছু মদ পাওয়া গেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মূলত এই অপরাধের কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সারওয়ার আলম বলেন, শামীমকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি নির্দোষ। তা করতে পারলে তিনি অবশ্যই ছাড়া পাবেন। না করতে পারলে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। তবে অভিযাগগুলো এখনও তদন্তাধীন।

যে অর্থ এফডিআর করা হয়েছে, তা অবৈধ পন্থায় অর্জন করা হয়েছে- এমন তথ্য রয়েছে । কীভাবে এসব অর্থ পেয়েছেন এটা প্রমাণ করার দায়িত্ব তার। তিনি বৈধভাবে অর্জন করতে পারেন, কিন্তু বৈধকাজের আড়ালে অবৈধ কিছু রয়েছে কিনা সেটা দেখার জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।

অফিসের বোর্ড রুম ও বিভিন্ন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, র্যাব মহাপচিালকের সঙ্গে শামীমের ছবিসহ দলীয় কর্মকাণ্ডের নানা ছবি দেখা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বড় ছবি কনফারেন্স রুমে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ছবির নিচে শামীমের পরিচয় লেখা হয়েছে ‘নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু বলেন, যুবলীগে জি কে শামীমের কোনো পদ নেই। সে নিজেই নিজেকে সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বলে বেড়াতো। এ নিয়ে যুবলীগে কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে। বাবলু বলেন, “জিকে শামীম এক সময় যুবদলের সাবেক সহ সম্পাদক ছিল। এখন সে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বলে শুনেছি।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, “জি কে শামীম নামে আমাদের কোনো সহ সভাপতি বা সদস্যও নাই।

শামীমের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বলেন, দলীয় পরিচয় দল থেকেই নিশ্চিত করা হবে। আর শামীম ঠিকাদারী ব্যবসার আড়ালে অবৈধ কিছু করেছেন কি না- সেটা তারা দেখবেন।

সূত্র: বিডিনিয়োজ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *