Thursday, May 2বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

দুদক কর্মকর্তা এনামুল বাসিরের অডিও রেকর্ড আছে তবে ঘুষ নেওয়ার কোন প্রমান নেই, ডিআইজি মিজান

বার্তা প্রতিনিধি: এ যেন শস্যের ভিতর ভুত। নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাসির। তিনি বলেছেন, ‘অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই। যিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে প্রমাণ করতে বলুন।’ গতকাল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনামুল বাসির এসব কথা বলেন। ঘুষ লেনদেনের কথোপকথনে ব্যবহৃত কণ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। আপনারা যত প্রকারের এক্সপার্ট নিয়ে পারলে প্রমাণ করেন। যেইভাবে পারেন প্রমাণ করেন। তাকে প্রমাণ নিয়ে আসতে বলেন। মিথ্যার কোনো প্রমাণ থাকে না।’ মিথ্যা অভিযোগ করে থাকলে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার নিজেরই চাকরি নাই। মামলা করব কী? মামলার প্রশ্ন অবান্তর।’ অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানের মুখে থাকা পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছে তদন্তের তথ্য ফাঁস, চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অসদাচরণের অভিযোগে সোমবার দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাসিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এক নারীকে জোর করে বিয়ে ও পরে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে ডিআইজি মিজানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। গত বছরের ৩ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। প্রথমে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। পরে এই দায়িত্ব পান খন্দকার এনামুল বাসির। ডিআইজি মিজান রবিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দাবি করেন, দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাসির অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন এবং বিভিন্ন সময় তার কাছে তদন্তের তথ্য সরবরাহ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দুদক পরিচালক বাসিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

চালাকি করে পার পাবেনা মর্মে ঘুষ গ্রহণের সব রেকর্ড আছে দাবি ডিআইজি মিজানের কাছে : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ঘুষ গ্রহণের সব রেকর্ড নিজের কাছে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে সব রেকর্ড আছে। আমাকে যখন ডাকবে তখন সব দেখাব। নিজেকে সেভ করার জন্য এটা করেছি।’ গতকাল রাজধানীর বেইলি রোডের বাসায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দুদক কমিটি করে অডিওটির সত্যতা যাচাই করুক, সংশ্লিষ্ট কমিশনে পাঠানো হোক। এই ভোকালটা উনার (বাছিরের) কিনা দেখুক। তাহলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’
ঘুষ লেনদেনকারী বাসির ও মিজানের শাস্তি চাই: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল ও পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের মধ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, পুলিশের বিভাগীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দুদকের ভূমিকার অপরিহার্যতা দ্বিগুণ বেড়েছে।

ডিআইজির বিবৃতিতে বলা হয়, ঘুষ লেনদেনে অভিযুক্ত ওই তদন্ত কর্মকর্তার দুর্নীতির দায় এড়াতে পারে না দুদক। দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে প্রতিষ্ঠানটির ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে দুর্নীতিরও ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না- দুদকের এমন অবস্থান আমাদের শুধু হতাশই করেনি বরং আমরা বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত।

কবে এ ছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান ঘুষ দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করার পরও তার স্বপদে বহাল থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *