বার্তা প্রতিনিধি- শাকিল আহমেদ: চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানার পাঠানঠুলি খান সাহেব সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রহরীর হাতে শিশু ৩য় শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী দীপক দে নামে ব্যক্তি নগরীর ডবলমুরিং থানার পাঠানটুলি খান সাহেব সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রহরী।
গতকাল বুধবার সকালে ওই স্কুলের কম্পাউন্ডেই অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৪র্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন জানান, খবর শুনে আমরা ঐ স্কুলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ততক্ষনে সে পালিয়ে গেছে। তাকে ধরতে পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান শুরু করেছে।
খান সাহেব স্কুল ভবনটিতে সকাল সাতটা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রাথমিকের ও পরে মাধ্যমিক বিভাগের পাঠদান হয়। প্রহরী দীপক দুই বিভাগেই দায়িত্ব পালন করেন।
খান সাহেব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লিপি মহাজন জানান, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ছাত্রী ওই শিশুকে সকাল পৌনে ৭টার দিকে স্কুলের দ্বিতীয় তলায় নিপীড়ন করে দীপক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, স্কুল ভবনের চতুর্থ তলায় চার ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন দীপক। সেখান থেকে তিন জন দৌড়ে চলে গেলেও ওই শিশুটিকে তিনি ধরে ফেলেন। পরে দীপক তার হাতে চাবি দিয়ে দ্বিতীয় তলার ক্লাস রুম খুলতে বলেন। ওই ছাত্রী ক্লাস রুম খুলতে গেলে দীপক তাকে পিচন থেকে জড়িয়ে ধরে শ্লানিহীতার চেষ্টা করে।
পরে ঐ ছাত্রীটি কান্না করতে করতে নিচে নেমে অন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের বিষয়টি সে জানালে তারা সাথে সাথে ক্লা্শরুমে গিয়ে শিক্ষকদের জানান। তখন শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষককে ও বিষয়টি জানালে শিক্ষকরা ও অভিভাবকরা মিলে প্রহরী দীপক হাতেনাতে ধরলে সে তার দোষ স্বীকারও করে। কিন্তু ধীত দীপক কৌশলে পালিয়ে যায়।
এদিকে জানা যায় এর আগেও দীপকের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও নারী অভিভাবকদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ ছিল বলে প্রধান শিক্ষিকা লিপি জানান।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, মেয়েকে নিয়ে স্কুলে ঢুকে তিনি ওই শিশুকে কাঁদতে দেখে কাছে গিয়ে কারণ জানার চেষ্টা করলে সে তাকে বাসায় দিয়ে আসার অনুরোধ করে। পরে তাকে ভালোভাবে জিজ্ঞেস করলে সে বিয়ষটি জানানোর পর আমরা স্কুলের শিক্ষকদের জানাই। পরে মেয়েটির অভিভাবক এসে তাকে বাসায় নিয়ে যায়।
এদিকে ঐ স্কুলের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, দীপক ২০১৩ সালে স্কুলে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিল। তাকে বরখাস্ত করা হলেও ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সে আবার নিয়োগ পায়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মৌখিক অভিযোগ ছিল। কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশনকে কোনো সুপারিশ করতে পারিনি।
প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, স্কুলের প্রহরীর দায়িত্ব পালন করলেও দীপক ছিল বেপোরোয়া প্রকৃতির। বিভিন্ন সময়ে সে শিক্ষকদের সাথেও অসদাচরণ করে থাকে। তাকে অনেকবার প্রহরীর চাকুরী থেকে বাদ দিতে গেলে সে গরীব বলে তাকে তার পদে বহাল রাখা হয়।
পরে তাকে পুলিশ তার বাড়ী থেকে গ্রেপতার করে থানা হাজতে নিয়ে যায়। তার নামে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তদন্তকারী অফিসার।