Sunday, May 5বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

একজন কোটিপোতি পিয়ন তার এত সম্পদের উৎস কোথায়

বার্তা প্রতিনিধি: একজন কোটিপতি পিয়ন হিসেবে পরিচিত নড়াইল সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. তরিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মিসেস নাসরিন বেগমের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তিনি যশোর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের দায়ে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম মোড়ল মামলাটি দায়ের করেন।

কোটিপোতি তরিকুল ইসলাম নড়াইলের কালিয়া উপজেলার গাছবাড়িয়া গ্রামের শাহাদাৎ মুন্সির ছেলে। তার স্ত্রী নাসরিন বেগম পেশায় একজন গৃহিণী এবং তার স্বামীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল।

এদিকে দুদক সূত্র জানায়, বতর্মানে নড়াইল পৌরসভার ভাদুলীডাঙ্গায় তার স্ত্রী জমি ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে আলিশান বাড়ি করে সেখানে বসবাস করছেন।

তবে তরিকুল ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম পরস্পরের সহায়তায় ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৩ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে তা দুদকে গোপন করার অপরাধে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে মামলটি দায়ের করা হয়।

এদিকে দুদকের তদন্তকালে ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন, যশোরের উপপরিচালকের মাধ্যমে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে তরিকুল ইসলাম তার নিজ নামে ১০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ দেখান।

একমাত্র স্বামী তরিকুলের আয়ের ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী নাছরিন বেগমের নামে নড়াইল পৌরসভার ৬৭ নম্বর ভাদুলীডাঙ্গা মৌজায় ২৮০ দাগে ২০১ খতিয়ানে ১৪ শতক জমি ক্রয় মূল্য বাবদ ৮ লাখ টাকা। ওই জমির ওপর ভবন নির্মাণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৭০ হাজার টাকার সম্পদ, সর্বমোট ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসেব দেখিয়েছেন।

তরিকুলের এ ছাড়া ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকার দেনা আছে বলে দুদকের কাছে হিসেব দেখান। দেনার টাকা বাদ দিয়ে তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ লাখ টাকা।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সৌরভ দাস ও সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম মোড়ল এ বিয়য়ে তদন্ত শুরু করেন। তদন্তকালে তরিকুল ও তার স্ত্রীর নামে ৫৫ লাখ ৩২ হাজার ৪৩৩ টাকার সম্পদের হিসেব পান।

তার ওই টাকা হতে দেনা দেখানো ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা বাদ দিয়ে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৩ টাকা।

এদিকে ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মো. তরিকুল ইসলাম জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে তা দিয়ে তার ওপর নির্ভরশীল তার স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন করে।

তবে এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম মোড়ল বলেন, ‘অনুসন্ধানে প্রাপ্ত সম্পদের ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৩ টাকা থেকে তাদের দুদকে দেওয়া সম্পদের হিসাব ৩১ লাখ টাকা বাদ দিলে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৩ টাকার সম্পদের হিসাব গোপন করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

সূত্রমতে জানা গেছে তরিকুল ইসলাম ২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নড়াইল জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নাইটগার্ড পদে যোগদান করে। এরপর ২০০৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পিয়ন পদে পদোন্নতি পান। ২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কালিয়ায় বদলি হয়। বর্তমানে তিনি নড়াইলে কর্মরত আছেন।
সূত্র: আমাদের সময়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *