বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির ভেতরে এবার অতিভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়ে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আজ শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালক মো. ছানাউল হক মন্ডল গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
মো. ছানাউল হক মন্ডল জানান, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে আগামী তিন দিন অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে অন্যান্য বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশিদের রেকর্ড পরিমাণ অর্থ জমা আছে সুইস ব্যাংকে
ছানাউল হক আরো বলেন, এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। আর খুলনা ও রংপুরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছি। সেই পূর্বাভাস আপাতত অব্যাহত থাকবে। আজকে (শনিবার) সন্ধ্যায় ভারি বর্ষণ নিয়ে আপডেট পূর্বাভাস দেওয়া হবে।
আজ শনিবার দিনব্যাপী সিলেট বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে সিলেট শহর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আরও বৃদ্ধি পেয়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আবহাওয়াবিদদের দেওয়া বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আগামী দুই দিনের মধ্যে দেশের উজানে ভারতের মেঘালয়, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভারি বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। এরই মধ্যে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে উজানের নদ–নদীগুলোর পানি বাড়ছে। নতুন করে বৃষ্টি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। এছাড়া আগামী দুই দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলায়ও বন্যা হতে পারে।
তবে পূর্বাভাস অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার কুড়িগ্রাম দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে তা আরও সামনে এগিয়ে আসছে। ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও পাবনায় বন্যার পানি প্রবেশ করতে পারে। আর তিস্তা অববাহিকার কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুরে বন্যা শুরু হতে পারে।
এদিকে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে একই সময়ে দেশের মধ্যাঞ্চলের চারটি জেলায় বন্যা শুরু হতে পারে। পদ্মার মূল নদী গঙ্গার উজানে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর ও ফরিদপুরে নিম্নাঞ্চলে বন্যা শুরু হতে পারে।
শনিবার চট্টগ্রামেও সকাল থেকে শুরু হওয়া রেকড পরিমান বৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম ছিন্নমূলে পাহাড় ধসে ৪ জনের প্রানহানীর খবর পাওয়া গেছে।