Sunday, May 5বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

যৌন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মেরে হাত ভেঙে দেয়

বার্তা প্রতিনিধি: নিয়তি অনেককে নিস্ব করে দেয় যারা উপভোগ করেন একমাত্র তারাই জানেন। নিয়তির টানে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়া অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যাওয়া একশ জনের বেশি শ্রমিক কয়েক দিন আগে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন, যাদের মধ্যে ৮১ জনই নারী শ্রমিক।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০১৮ সালেই সৌদি আরব থেকে ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন।

দালালদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন, এক ধরনের কাজের আশা দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে অন্য কাজে বাধ্য হয়েছেন বা কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন- ফেরত আসা শ্রমিকদের অধিকাংশের গল্পটাই এরকম।

এ সপ্তাহে ফিরে আসা নারী শ্রমিকদের কয়েকজনের করুণ পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে।

মৌলভীবাজারের বাসিন্দা আমেনা বেগম (ছদ্মনাম) সৌদি আরবের রিয়াদে প্রায় দেড় বছর ছিলেন, যার মধ্যে ৫ মাসই তাকে কাটাতে হয় পুলিশের হেফাজতে।

আমেনা বেগম জানান, যে বাসায় কাজ করতে গিয়েছিলেন, সেখানে যৌন প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। যৌন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় টানা তিন দিন আমাকে খেতে দেওয়া হয়নি। এক পর্যায়ে মেরে হাত ভেঙে দেওয়া হয় এবং বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। তারপর বাসার সামনে গভীর রাতে পুলিশ আমাকে পায় এবং থানায় নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে চিকিৎসা দেওয়ার পর সেখানকার এজেন্টের মাধ্যমে তাকে আবারো ঐ বাড়িতেই ফিরে যেতে বাধ্য করা হয় বলে জানান ভুক্তভোগী ওই নারী।

সেখানে ফিরে যাওয়ার পর আবারো বেশ কিছুদিন তার উপর শারীরিক অত্যাচার এবং যৌন নির্যাতন চলে বলে জানান তিনি।

শারীরিক অত্যাচারের পর একপর্যায়ে তাকে আবারো একদিন রাতে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হলে পুলিশ তাকে বাসার সামনে খুঁজে পায় এবং পরবর্তীতে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয় তাকে। পরে পুলিশের হেফাজত থেকেই দেশে ফেরার ব্যবস্থা হয় তার।

২৫ বছর বয়সী এই নারী দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব যাওয়ার পর গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন বলে জানান। যদিও যাওয়ার আগে তার কাছে গোপন করা হয়েছিল যে গৃহকর্মীর কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাকে।

তিনি বলেন, আমাকে শারীরিক নির্যাতন করা তো হতোই, নিয়মিত খাবারও দেয়া হতো না। আর আমি যে এক বছর কাজ করেছি তার মধ্যে আমাকে কেবল দু’মাসের বেতন দেয়া হয়েছে; তাও আংশিক।

আমেনা বেগম জানান, সৌদি আরব যাওয়ার জন্য দালালকে এক লাখ টাকা দিতে হয় তাকে। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার সময় তাকে ফিরতে হয় খালি হাতে। বাবা-মা সুদে টাকা ধার নিয়ে আমাকে সৌদি পাঠিয়েছিল। সেখানে সব নির্যাতন, অত্যাচার সহ্য করেও কাজ করতাম টাকার জন্য। কিন্তু টাকা চাইলেই আমার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হতো। এক বছর কাজ করলেও শেষ পর্যন্ত দুই মাসের আংশিক বেতন দেওয়া হয় আমাকে।

আমেনা বেগমের সাথে ফেরত আসা নারীদের একজন ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ফাতেমা বানু (ছদ্ম নাম)। সৌদি আরবে তার গল্পটাও অনেকটা একই রকম।

গহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে এক পর্যায়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও তার চিকিৎসা করাতে অস্বীকৃতি জানায় গৃহকর্তা।

এরপর তাকে জোর করে মাদক সেবন করিয়ে ঘরে আটকে রাখা হয়। মাদক সেবনের কারণে এক পর্যায়ে তার মানসিক সমস্যাও তৈরি হয় বলে জানান এই নারী।
সূত্র: মানবকণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *