এবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিইসির পদত্যাগ দাবী করলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম নুরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সিইসির কাছে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন তো নয়ই, নিরপেক্ষ আচরণও আশা করা যায় না’ বলে অভিযোগ তুলে এক বিবৃতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বলেছে, রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান করছি যাতে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কারণ এমন মেরুদণ্ডহীন কমিশনের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।
মঙ্গলবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঐক্যফ্রন্টের জরুরি বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই বিবৃতির কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সন্ধ্যা ৭টায় ওই বৈঠক শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে শেষ হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। এরআগে দুপুরে নির্বাচন ভবনে সিইসি কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের ‘উত্তপ্ত’ বাক্য বিনিময়ের সূত্র ধরে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকটি হয়।
বৈঠকে অংশ নেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুসহ শীর্ষ নেতারা।
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন ‘এটি হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন।’
তিনি আরও বলেন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরীও আক্রান্ত হয়েছেন। কাউকে বাদ দিচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে, এটা কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ, অকার্যকর। এটা আজ জাতির সামনে প্রমাণ হয়েছে। আমরা এই মুহূর্তে সিইসির পদত্যাগ চাই। এখনই চাই তিনি পদত্যাগ করুন।
এরপর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে ঐক্যফ্রন্টের বিবৃতি পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিবৃতিতে বলা হয়, সারা দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর হামলা মামলা, নির্যাতনের বিষয়ে অবহিত করতে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলাম ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরোর নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা। কিন্তু আমাদের অভিযোগ শুনে সিইসি নূরুল হুদা সরকার দলীয় নেতার মত আচরণ করেছেন। এতে আরও বলা হয়, সিইসি ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে তা ছিল অত্যন্ত অশোভন। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তাৎক্ষণিক ক্ষোভ জানিয়ে বৈঠক বর্জন করেন। সিইসির কাছ থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন দূরের কথা, নিরপেক্ষ আচরণও আশা করা যায় না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ এমন মেরুদণ্ডহীন কমিশনের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। তাই অভিলম্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবী করেছেন।