Tuesday, April 23বাংলারবার্তা২১-banglarbarta21
Shadow

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ৩ জনকে খুন করেছে পরিবারের বড় মেয়ে হত্যার নেপত্তে দেহ ব্যবসা

বার্তা প্রতিনিধি: সরকারী জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯ এ একটি ফোন পেয়ে ঢাকার জুরাইনের মুরাদপুরে গিয়ে এক ব্যক্তি এবং তার স্ত্রী ও মেয়ের লাশ পায় কদমতলী থানা পুলিশ।
কোতয়ালী থানা পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই ফোন যিনি করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, ‘তিনজনকে খুন করেছি, তাড়াতাড়ি আসেন, তা না হলে আরও দুইজনকে খুন করব’।

জাতীয় জরুরী সেবার হট লাইনে ওই ফোন যিনি করেছিলেন, তিনি নিহত ব্যক্তিরই আরেক মেয়ে বলে পুলিশ শনাক্ত করেছে। লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

কোতয়ালী থানা পুলিশ বলছে, পরিবারের সবার প্রতি ক্ষোভ থেকে সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন ২৪ বছর বয়সী ওই নারী।
শ্বাসরোধে হত্যায় নিহতরা হলেন- গৃহকর্তা মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী মৌসুমী ইসলাম (৪২) ও মেয়ে জান্নাতুল (২০)। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাসুদের মেয়ে মেহজাবিনকে।

নিহত ৩জন ছাড়া ওই বাড়ি থেকে মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম (৪০) এবং তাদের ৪ বছর বয়সী শিশু সন্তানকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মাহজাবিনের স্বামী শফিকুল হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার রাতে তার স্ত্রী তাকে চা দিয়েছিল। সেই চা পানের পর আর কিছু তার মনে নেই।

জুরাইনের মুরাদপুরের কদমতলী থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, “সে (মেহবাবিন) কৌশলে বাসার সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর সবাই অচেতন হয়ে যায়। এরপরই সকলের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধে। পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।”

৩টি লাশের প্রাথমিক তদন্তে এটাই পুলিশ জানতে পেরেছে বলে জানান তিনি।

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের (শ্যামপুর জোন) অতিরিক্ত উপ কমিশনার কাজী রোমানা নাসরিন বলেন, “গ্রেপ্তার মেহজাবিন ৯৯৯ এ ফোন করে জানায় যে সে তিনজনকে হত্যা করেছে, পুলিশ তাড়াতাড়ি না আসলে আরও দুইজনকে হত্যা করবে। এরপরেই পুলিশ সেখানে যায়।

বাসার বড় মেয়ে মেহজাবিনের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী পুলিশ দ্রুত সেখানে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, তিনজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, অন্য দুজনকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত মাহজাবিনের বাবা মাসুদ রানা প্রবাসে থাকতেন। তিন মাস আগে ওমান থেকে দেশে ফেরেন তিনি।

এই ত্রিপল হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে মেহজাবিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এদিকে ডিএমপির ওয়ারি বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, “মেহজাবিনের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, বাবা না থাকায় তার মা তাকে এবং তার ছোট বোনকে (নিহত জান্নাতুল) দিয়ে দেহ ব্যবসা করাত। এসব নিয়ে প্রতিবাদও করেছিল সে, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

বড় মেয়ে মাহজাবিনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ছোট বোনকে দিয়ে ব্যবসা চলছিল। এর মধ্যে তার স্বামী ছোট বোনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে।

জানা যায় নিহত মাসুদ রানা ওমানে আরেকটি বিয়ে করেছেন। তিনি ছুটিতে দেশে এসেছেন বলে জানা গেছে।

জান্নাতুল ফেরদৌসের তার মেয়েদের দিয়ে দেহ ব্যবসা বাবার দ্বিতীয় বিয়ে এসব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ থেকে পরিবারের সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে মেহজাবিন পুলিশকে জানিয়েছেন।

পুলিশের ধারনা মেহজাবিনের একার পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো কতটুকু সম্ভব, এনিয়ে পুলিশের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

এদিকে ঢাকার কদমতলী থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, মেহজাবিনের স্বামীকেও আমরা সন্দেহের বাইরে রাখছি না। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সম্পত্তির বিষয়ও এখানে রয়েছে। তদন্তে এসব আসবে। এই হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *